বাস চালক, হেলপার ও কন্ডাক্টরদের দৌরাত্ম্য নিয়ে সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগের অন্ত নেই। বেশি ভাড়া আদায়, কথায় কথায় যাত্রীদের ওপর চড়াও হওয়া তাদের একাংশের মজ্জাগত অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। যৌন হয়রানি এমনকি ধর্ষক হিসেবেও বাস চালক ও হেলপারদের একের পর এক অপকান্ড এ পেশার ভাবমূর্তিকে তলানিতে ঠেকিয়েছে। এ বিষয়ে বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের মহাপ্রতাপশালী নেতারা ছাড়া আর কারোরই দ্বিমত থাকার কথা নয়। বাস চালক ও হেলপারদের বিরুদ্ধে ছাত্র বিক্ষোভ থামতে না থামতেই অপকর্মের কুশীলবরা নিজেদের কুৎসিত চেহারা জানান দিতে উঠেপড়ে লেগেছে। রবিবার নারায়ণগঞ্জের বন্দরে চলন্ত বাসে এক গৃহবধূকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এবং সংশ্লিষ্ট বাসটির চালক, হেলপার ও কন্ডাক্টরকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে। ওইদিন রাত ১০টায় এক গৃহবধূ রূপগঞ্জের গাউছিয়া যাওয়ার জন্য ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে সায়েদাবাদ টু গাউছিয়া রুটের মুক্তিযোদ্ধা পরিবহনে ওঠেন। চিটাগাং রোডে আসার পর সব যাত্রী বাস থেকে নেমে গেলে ওই গৃহবধূ একাই রয়ে যান। পরে বাসটি বন্দর থানার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জাহিন গার্মেন্টের সামনে এলে চালক, কন্ডাক্টর ও হেলপার বাসের মধ্যে উচ্চৈঃস্বরে গান বাজিয়ে বাসযাত্রী গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। পরে ধর্ষিতা কৌশলে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেওয়ার কথা বলে বাস থেকে নেমে পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তিন ধর্ষককে আটক করতে সক্ষম হয়। বন্দর থানা পুলিশ ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার পর রবিবার সকালে ২২ ধারায় আদালতে পাঠায়। তিন ধর্ষককে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানালে আদালত তিন দিন মঞ্জুর করে। চলন্ত বাসে তরুণীকে দলবেঁধে ধর্ষণ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ধর্ষণের পর হত্যাও ঘটছে কখনো কখনো। যানবাহনে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণ নিত্যকার ঘটনা হলেও এর একটি ক্ষুদ্র অংশ আইনের আওতায় আসে। আমরা আশা করব নারী যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে এ-সংক্রান্ত অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।