বুধবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি

প্রশাসনের প্রতিশ্রুতিশীল ভূমিকা কাম্য

অবৈধ অস্ত্রের যথেচ্ছ ব্যবহার দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। ইউনিয়ন পরিষদসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দেশের কোথাও কোথাও অবৈধ অস্ত্রবাজদের দাপট পরিলক্ষিত হয়েছে এবং তা পুরো নির্বাচনের মুখে চুনকালি লাগিয়েছে। অবৈধ অস্ত্রধারীদের ভ্রƒকুটির কাছে গণতন্ত্র জিম্মি হয়ে পড়েছে। নির্বাচন এলেই অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিষয়টি প্রাসঙ্গিকতা পায়। তবে সত্যিকার অর্থে অবৈধ অস্ত্রধারীদের দাপট পুরো দেশবাসীর স্বস্তি কেড়ে নিয়েছে। সরকারি ক্রয়, নির্মাণকাজ ও প্রাতিষ্ঠানিক নানা কর্মকান্ডে স্বচ্ছতার জন্য প্রতিযোগিতামূলক যে টেন্ডারব্যবস্থা চালু রয়েছে, স্বার্থান্বেষী মহলের ভাড়া করা অবৈধ অস্ত্রবাজদের বলপ্রয়োগ, হুমকি-ধমকি ও জবরদখলে তা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। দেশের উন্নয়নে সরকার যে অর্থ ব্যয় করছে তার একাংশ চলে যাচ্ছে প্রভাবশালীদের পকেটে। বাংলাদেশে পেশাদার অপরাধী বা সমাজবিরোধীদের ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্রের সিংহভাগ আসে প্রতিবেশী দুটি দেশ থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে। ভারত ও মিয়ানমারে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ছোট ছোট কারখানায় তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক অস্ত্র। বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা এলাকায় ভারতে অস্ত্র তৈরির কমপক্ষে ৩০টি কারখানা রয়েছে। বিশেষ করে ভারতের বিহার রাজ্যের মুঙ্গের, ঝাড়খন্ড, মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ, মালদহসহ বিভিন্ন এলাকায় গোপনে অস্ত্রের বেশ কিছু ছোট ছোট কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় অস্ত্র তৈরি করছে মুঙ্গেরে বন্ধ হয়ে যাওয়া বিভিন্ন অস্ত্র কারখানায় কাজ করা অভিজ্ঞ চৌকস কারিগররা। ভারতের বিভিন্ন এলাকায় চোরাকারবারিরা গোপন আস্তানায় লেদ মেশিন বসিয়ে অস্ত্র তৈরি করে বাংলাদেশে পাচার করছে। ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের কমপক্ষে ২০টি পয়েন্ট দিয়ে এসব অস্ত্র দেশে ঢুকছে। অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ করতে হলে সীমান্ত এলাকায় কঠোর নজরদারির বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিশ্রুতিশীল ভূমিকাও জরুরি। শান্তি-শৃঙ্খলার স্বার্থে সারা দেশে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযানও চালাতে হবে জোরেশোরে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর