সপ্তম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আগের ছয় ধাপের মতো সংঘর্ষ ও হাতহতই শুধু নয়, সশস্ত্র লড়াইয়ের উদাহরণও রেখেছে। সোমবার অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র লড়াই, হামলা, ভাঙচুর ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় তা সশস্ত্র লড়াই হিসেবে আবির্ভূত হয়। ঠাকুরগাঁওয়ে ককটেল হামলা, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ব্যালট পেপার ছিনতাই, জয়পুরহাটে সিল মারা ব্যালট পেপার উদ্ধারের ঘটনাও ঘটেছে। সাতকানিয়ায় সপ্তম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সহিংসতার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। ভোট গ্রহণের পাশাপাশি নৌকা বনাম স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় প্রতিটি ইউনিয়নে সংঘর্ষ, গুলিবর্ষণ, অস্ত্রের মহড়া, ভাঙচুর ও ব্যালট চুরির ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের কারণে তিন ইউনিয়নের চারটি ভোট কেন্দ্র স্থগিত রাখা হয়। দুটি ইউনিয়নে শিশুসহ দুজন নিহতের পাশাপাশি সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্যেও অঘটন এড়ানো যায়নি। ইউনিয়ন পরিষদ হলো তৃণমূল পর্যায়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থানীয় সরকার। এ সরকারের চেয়ারম্যান ও মেম্বার কারা হবেন তা নিয়ে থাকে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ। যে কারণে এ নির্বাচনে উৎসবী পরিবেশ সৃষ্টি হয়। নির্বাচনের অনেক আগে থেকেই শুধু প্রার্থী নয়, ভোটারদের মধ্যেও শুরু হয় প্রস্তুতি। জাতীয় নির্বাচনের প্রতি নানা কারণে ভোটাররা আগ্রহ হারালেও স্থানীয় নির্বাচনে তার খুব একটা প্রভাব পড়েনি। তবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সন্ত্রাস, অনিয়ম ও খুনোখুনির যে গড্ডলিকা প্রদর্শনী চলছে তাতে আগামীতে ভোটাররা কেন্দ্রমুখী হবেন কি না সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে। সহিংসতার কারণে শুধু নির্বাচন কমিশন নয়, সরকারের ভাবমূর্তিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীন সুষ্ঠু নির্বাচন যেন কল্পনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার পরও আমরা শেষ ধাপের ইউপি নির্বাচনে ভোটাররা ভোটদানের সুযোগ পাবেন এমনটিই আশা করতে চাই।