সোমবার, ১৬ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
ইতিহাস

মীরজাফরের ক্ষমতা লাভ

জাফর খান

২৩ জুন, ১৭৫৭ সাল পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হন বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলা। তাঁর রাজধানী প্রায় ৫০ মাইল দূরে, মুর্শিদাবাদে। সারা রাত উটের পিঠে চেপে পর দিন ভোরেই সিরাজ পৌঁছেন রাজধানীতে। মীরজাফর আর রবার্ট ক্লাইভ তখনো পলাশীর প্রান্তরেই রয়েছেন। পর দিন সকালে রবার্ট ক্লাইভ একটি চিরকুট পাঠালেন মীরজাফরের কাছে। লেখা ছিল, ‘এই জয়ের জন্য আমি আপনাকে অভিনন্দন জানাই। এ জয় আমার নয়, আপনার। আশা করি আপনাকে নবাব ঘোষণা করতে পেরে নিজে সম্মানিত হতে পারব।’ এ চিরকুট পাঠানোর আগে, যুদ্ধজয়ের পর দিন সকালেই মীরজাফর যান ইংরেজদের শিবিরে, রবার্ট ক্লাইভের সঙ্গে দেখা করতে। কিছুটা পরিশ্রান্ত, কিছুটা চিন্তিত লাগছিল তাকে। ইংরেজ সেনারা তাকে নিয়ে গিয়েছিল কর্নেল ক্লাইভের তাঁবুতে। রবার্ট ক্লাইভ তখনো লর্ড হননি, কর্নেল ক্লাইভ তিনি তখন। ক্লাইভ মীরজাফরকে বললেন, ‘আপনার এখনই রাজধানী মুর্শিদাবাদের দিকে রওনা হওয়া উচিত। শহরটা নিজের কবজায় নিয়ে ফেলুন। আপনার সঙ্গে কর্নেল ওয়াটসও যাবেন।’ ক্লাইভ তার নিজের সেনাদের নিয়ে পেছনে পেছনে চললেন। সিরাজ যে দূরত্ব এক রাতের মধ্যে পার করেন, সেই ৫০ মাইল পেরোতে ক্লাইভ আর তার বাহিনীর লেগে যায় তিন দিন। রাস্তার নানা জায়গায় তোপ দাগার ফলে গর্ত, ভেঙে পড়া গাড়ি আর সিরাজউদ্দৌলার সৈনিক আর ঘোড়ার মৃতদেহ ছড়িয়ে ছিল। স্যার প্যান্ডেরল মুন তার ‘দ্য ব্রিটিশ কনকোয়েস্ট অ্যান্ড ডমিনিয়ন অব ইন্ডিয়া’ বইটিতে লিখছেন, ‘ক্লাইভের ২৭ জুনই মুর্শিদাবাদে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জগৎশেঠ তাকে বলেন ক্লাইভকে হত্যার পরিকল্পনা হচ্ছে। সেজন্যই আরও দুই দিন পর ২৯ তারিখে ক্লাইভ শহরে পৌঁছান।’ মীরজাফর শহরের প্রধান ফটকে অপেক্ষা করেন ক্লাইভকে স্বাগত জানানোর জন্য। দুজনেই একসঙ্গে শহরে ঢোকেন। রবার্ট ক্লাইভ মীরজাফরকে মসনদে বসিয়ে নতুন নবাবকে স্যালুট করেন।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর