শনিবার, ১৬ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রস্তাবিত শিক্ষা আইন

কোচিং ও নোটবইয়ে আত্মসমর্পণ

দীর্ঘ ১১ বছর টানাহেঁচড়ার পর কোচিং ও নোটবই ব্যবসায়ীদের কাছে নতিস্বীকার করে শিক্ষা আইন জারির প্রস্তুতি চলছে। প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনের খসড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের বাইরে শিক্ষকদের কোচিং-প্রাইভেটের সুযোগ রাখা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট টিউশনের মাধ্যমে পাঠদানের জন্য কোচিং সেন্টার পরিচালনা বা কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করা নিষিদ্ধ বলে গণ্য হবে না। তবে কোচিং সেন্টারে কোনো শিক্ষক তাঁর নিজ প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাতে পারবেন না। এমনকি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাইভেটও পড়াতে পারবেন না। কোচিং চালাতে গেলে নিবন্ধন নিতে হবে। তবে সরকার-নির্ধারিত অর্থের বিনিময়ে ও অভিভাবকদের সম্মতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রমের বাইরের সময় অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করা যাবে। অবশ্য এ বিষয়ে ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী আদেশ রয়েছে। ২০১১ সাল থেকে শিক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে আলোচনা চলছে। অভিযোগ আছে, নোট-গাইড বা সহায়ক বই এবং কোচিং-প্রাইভেটের মতো কিছু বিষয় রাখা-না রাখা নিয়েই আইনের খসড়াটি বছরের পর বছর ধরে ঘুরপাক খাচ্ছে। অবশেষে শিক্ষা আইনের খসড়া প্রণয়ন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। যাঁরা প্রাইভেট, কোচিং ও নোটবইয়ের ভূত শিক্ষার্থীদের ঘাড় থেকে নামানোর পক্ষে তাঁরা প্রস্তাবিত আইনকে অগ্রহণযোগ্য বলেই মনে করবেন। কারণ শিক্ষা আইন নামের অশ্বডিম্ব প্রসবের মাধ্যমে বছরের পর বছর ধরে শিক্ষার্থীদের ওপর চেপে বসা প্রাইভেট কোচিং, নোটবইয়ের নষ্ট সংস্কৃতিকে প্রকারান্তরে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। নোটবইয়ের নামে সহায়ক বইয়ের বেয়াড়া ভূতের রাজত্ব। কোচিং ও প্রাইভেটের অপরাজত্বও বহাল থাকবে নতুন ঢঙে। শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের এসব আপদের হাত থেকে রেহাই মিলবে না। মনে করা যেতে পারে কোচিং ব্যবসায়ীরা যে দাবি করেন তাদের হাত অনেক লম্বা, শিক্ষা আইনের নামে আত্মসমর্পণের ঘটনায় তা প্রমাণিত হলো। দুুর্ভাগ্য হয়তো একেই বলে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর