শুক্রবার, ১২ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

ডলার কারসাজি

অপচক্রের হোতাদের নিরস্ত করুন

দেশের অর্থনীতির জন্য বিসংবাদ ডেকে আনছে টাকার বিপরীতে ডলারের দামে অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি। মুদ্রার বাজার তার নিজস্ব নিয়মে চলবে এমনটিই প্রত্যাশিত। কিন্তু বাংলাদেশের রপ্তানি আয় যখন ঊর্ধ্বমুখী, রেমিট্যান্স যখন সন্তোষজনক, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যখন নিরাপদ অবস্থানে তখন টাকার বিপরীতে প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা ডলারের মূল্য বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। সরকার তথা কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দাম স্বাভাবিক রাখতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণের পরও ডলার কারসাজি চক্র আরও সংঘবদ্ধভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে। খোলাবাজারের কারসাজি চক্রের সঙ্গে যোগ হয়েছে বেশ কিছু ব্যাংক। চরম অস্থির বাজারে ডলারের দর বুধবার রেকর্ড ১১৯ টাকায় পৌঁছেছে। কারসাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে ব্যবস্থা নেওয়ার পরও বেপরোয়া মনোভাবের চক্রান্তকারীরা তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। ফলে ফের হুন্ডি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ডলার পাচারকারী চক্র তৎপর হয়ে উঠেছে। চক্রের কারসাজির কারণে ব্যাংকে চাহিদামতো ডলার না পেয়ে ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন। বেশি দাম দিয়ে খোলাবাজার থেকে ডলার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। ব্যবসায়ীদের অভিমত, ডলার নিয়ে কারসাজিতে জড়িত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে বাজার স্থিতিশীল হবে না। আমদানিনির্ভর শিল্পকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি এড়াতে চক্রের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআইর পক্ষ থেকে। ব্যবসায়ী নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ব্যাংকগুলোকে ডলার বা বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবসা করতে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তারা ব্যবসার নামে যে মুনাফাখোরি কর্মকান্ড চালাচ্ছে তা মেনে নেওয়া যায় না। ডলার সংকটের ইতি ঘটাতে হলে ব্যাংকগুলোর কারসাজি বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে বিদেশে অর্থ পাচারের ফাঁকফোকর বন্ধ করাও জরুরি। বৈদেশিক মুদ্রা যাতে কোনো অপখাতে ব্যবহৃত না হয় তা নিশ্চিত করতে বিলাসী পণ্যের আমদানি শূন্য পর্যায়ে আনতে হবে। যেভাবেই হোক টাকার বিপরীতে ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার কোনো বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর