রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ধূমপান নিয়ে বিদ্রোহ

ধূমপান নিয়ে বিদ্রোহ

ধূমপান নিয়ে পৃথিবীতে অঘটন কম হয়নি। অষ্টদশ শতাব্দীর শেখ ভাগে এডিনবার্গে পিউরিটানরা সাবাথের রাস্তায় ধূমপান নিষিদ্ধ ঘোষণা করলে ছাত্ররা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা দল বেঁধে পিউরিটানদের বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়। বিক্ষোভকারীদের প্রত্যেকের হাতে ছিল জ্বলন্ত মশাল। পিউরিটানদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা। এ নিয়ে হাঙ্গামার সৃষ্টি হয়। তাতে ১৭ জন মারাও যায়। শেষ পর্যন্ত পিউরিটানরা ধূমপানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হয়। প্র“শিয়ায় ১৮৪৮ সালে রাস্তাঘাটে প্রকাশ্য ধূমপান নিষিদ্ধ ছিল। ধূমপানের জন্য কেউ ধরা পড়লে প্রথমবার জরিমানা করা হতো। দ্বিতীয়বারের শাস্তি হাজতবাস আর তৃতীয়বারের শাস্তি ছিল কমপক্ষে পাঁচ বছরের জেল। এ নিষেধাজ্ঞা মেনে নিতে পারেনি প্র“শিয়ার ধূমপায়ীরা। রাজপ্রাসাদের সামনে জড়ো হয়ে তারা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এ বিক্ষোভ দমনে অ™ভুত কৌশল নেওয়া হয়। তরুণ রাজকুমার লিচনোভস্কি প্রাসাদের ঝুলবারান্দায় একটি টেবিল পেতে তার ওপর দাঁড়িয়ে জনতার উদ্দেশে হাত নাড়েন। এর পরপরই পকেট থেকে সিগারেট বের করে সেটা ধরান। তারপর বলেন, তোমাদের ধূমপানের স্বাধীনতা দেওয়া হলো। উল্লাসে ফেটে পড়ে জনতা। ধূমপান শুরু করে দিল তারা বিজয়ের আনন্দে। অস্ট্রিয়ানরা এক সময় মিলান শাসন করত। হঠাৎ তারা তামাকের ওপর বিরাট অঙ্কের কর ধার্য করে। মিলানের জনগণ ধূমপান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। কাউকে সিগারেট খেতে বা পাইপ টানতে দেখলে তারা তা ছুঁড়ে ফেলেও দিত। অস্ট্রিয়ান কমান্ডার ইন-চিফের কানে খবরটা পৌঁছার পর তিনি তার সেনাবাহিনীর জন্য তামাক ও সিগারেট ফ্রি করে দেন। এতে হিতে বিপরীত হলো। পাভিয়ায় এক ছাত্র এক সৈন্যের মুখ থেকে সিগারেট কেড়ে নিতে গিয়ে গুলি খায়। এরপর ধূমপানবিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে ইতালিতে। পিয়েডমন্টে জনগণ অস্ত্র তুলে নেয় হাতে এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে মিলান থেকে সব সৈন্য প্রত্যাহার করা হয়।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর