শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
ইতিহাস

সুলতান ইলতুৎমিশ

সুলতান ইলতুৎমিশ

দিল্লি সালতানাতের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শামসুদ্দীন ইলতুৎমিশ ইলতুৎমিশ (১২১০-১২৩৬)। তুর্কিস্তানের ইলবারি গোত্রের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ইলতুৎমিশের বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা ও সুদর্শন চেহারা তাঁর ভাইদের মনে ঈর্ষার উদ্রেক করে এবং তারা তাঁকে বাল্যকালে ক্রীতদাসরূপে বিক্রি করে দেয়। অবশ্য দুর্ভাগ্য তার গুণাবলিকে বিনষ্ট করতে পারেনি। দিল্লির শাসনকর্তা কুতুবউদ্দীন তার নৈপুণ্যে আকৃষ্ট হয়ে তাকে উচ্চমূল্যে ক্রয় করেন। ইলতুৎমিশের পদমর্যাদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে। তিনি দিল্লির সুলতান কুতুবউদ্দীনের অধীনে বদায়ুনের শাসনকর্তা নিযুক্ত হন। তার সঙ্গে সুলতানের এক কন্যার বিবাহ দেওয়া হয়। ইলতুৎমিশ ১২১০ খ্রিস্টাব্দে দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন। সিংহাসনে আরোহণ করার পর ইলতুৎমিশ বহুবিধ সমস্যার সম্মুখীন হন। তখন বাংলার পশ্চিম ও উত্তর অঞ্চলই শুধু মুসলিম অধিকারভুক্ত ছিল। ইলতুৎমিশের সিংহাসন লাভের আগেই আলী মর্দান খলজীর নেতৃত্বে লখনৌতির মুসলিম রাজ্য স্বাধীনতা ঘোষণা করে। আলী মর্দানের কাছ থেকে গিয়াসউদ্দীন ইওজ খলজী ক্ষমতা কেড়ে নেন এবং তিনিও দিল্লির কর্তৃত্ব অস্বীকার করেন। অন্যত্র ব্যস্ত থাকার কারণে ইলতুৎমিশ লখনৌতির দিকে নজর দিতে পারেননি। ১২২৫ খ্রিস্টাব্দের দিকে সুলতান নিজেই ইওয়াজের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করেন। একটি সন্ধির মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান ঘটে। সন্ধির শর্তানুসারে ইওজ খলজী ইলতুৎমিশের নামে খুতবা পাঠ ও মুদ্রা চালু করতে এবং যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৮০ লাখ টাকা ও ৩৮টি হাতি প্রদানের অঙ্গীকার করেন। বিহারকে তখন বাংলা থেকে পৃথক করে আলাউদ্দীন জানীকে বিহারের শাসনকর্তা নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু সুলতান দিল্লিতে ফিরতে না ফিরতেই ইওজ আবার বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তিনি আলাউদ্দীন জানীকে বিহার থেকে বিতাড়িত করেন। সুলতান তখন আলাউদ্দীন জানীসহ তাঁর জ্যেষ্ঠপুত্র নাসিরউদ্দীন মাহমুদকে ইওয়াজের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। যুদ্ধে ইওয়াজ নিহত হন এবং লখনৌতি আবার দিল্লি সালতানাতের একটি প্রদেশে পরিণত হয় (১২২৭)। শাহজাদা নাসিরউদ্দীন ১২২৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত বাংলা শাসন করেন। বাংলার পরবর্তী শাসনকর্তা ছিলেন আলাউদ্দীন দৌলতশাহ খলজী (১২২৯-১২৩০)। কিন্তু শিগগিরই ইখতিয়ার উস্টিন বলকা খলজী তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর