শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মানসিক রোগ

কুসংস্কারে ভোগা চলবে না

দেশে মানসিক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। মোট জনসংখ্যার এক বিশাল অংশ ভুগছে এই রোগে। যে সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি এবং রোগাক্রান্তদের ৯৪ শতাংশই থাকছে চিকিৎসাসেবার বাইরে। মানসিক রোগে আক্রান্তদের বেশির ভাগ নিজেকে রোগাক্রান্ত ভাবতে নারাজ। এমনকি তাদের পরিবারের সদস্য এবং আপনজনদের মধ্যেও রয়েছে বিভ্রান্তি। মানসিক রোগের বিস্তার অবশ্য একটি বিশ্বজনীন সমস্যা। বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য রিপোর্ট ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কর্মকৌশল ২০২০-৩০’ এর অবহিতকরণ অনুষ্ঠানে বলা হয়েছে- বিশ্বে প্রতি আটজনে একজনের রয়েছে মানসিক সমস্যা। এর মধ্যে ৪৭.৬ শতাংশ পুরুষ ও ৫২.৪ শতাংশ নারী। কিশোর-কিশোরী ১৪ শতাংশ। মানসিক সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের মধ্যে প্রতি ১০০ জনে একজন আত্মহত্যা করছে। এর মধ্যে ৫৮ শতাংশ ৫০ বছরের আগে বেছে নিচ্ছে আত্মহত্যার পথ। যারা মানসিক রোগে ভুগছে তাদের মধ্যে ৯২ থেকে ৯৪ শতাংশ চিকিৎসাসেবার বাইরে রয়েছে। কুসংস্কার, চিকিৎসক সংকট ও পর্যাপ্ত সেবার ব্যবস্থা না থাকা এ অবস্থার জন্য দায়ী। গবেষকদের মতে, বাংলাদেশে মানসিক রোগাক্রান্তদের মধ্যে বছরে আত্মহত্যা করছে ১০ থেকে ১৪ হাজার মানুষ। এর বিপরীতে মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবী রয়েছে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা সাইকিয়াট্রিস্ট ৩৫০ জন, মনোবিজ্ঞানী বা সাইকোলজিস্ট পাঁচ শতাধিক, অন্যদের মধ্যে রয়েছেন অকুপেশনাল থেরাপিস্ট, স্পিচ ও ল্যাংগুয়েজ থেরাপিস্ট, সাইকিয়াট্রিক সোশ্যাল ওয়ার্কার। সেবা দেওয়ার জন্য রয়েছে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ৪০০ শয্যা, পাবনা মানসিক হাসপাতালে ৫০০ শয্যা; এর বাইরে চিকিৎসার জন্য ৪০টি করে শয্যা রয়েছে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, সিএমএইচ, কাউন্সিলিং স্কুল সাইকোলজি বেসরকারি সংস্থা, মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে। মানসিক সমস্যা পরিবার ও সমাজে সমস্যা সৃষ্টি করছে। সামাজিক অস্থিরতার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে রোগাক্রান্তরা।  এর হাত থেকে রক্ষা পেতে মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যত্নবান হতে হবে। কুসংস্কারে ভোগার বদলে রোগাক্রান্তদের চিকিৎসায় চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর