বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মুরব্বি একটি দেশের পররাষ্ট্র সচিব ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন ওটা তো তলাবিহীন ঝুড়ি। বাংলাদেশ টিকে থাকবে না এমন কথাও বলার চেষ্টা করত মুক্তিযুদ্ধের দেশি-বিদেশি শত্রুরা। কিন্তু ফিনিক্স পাখির মতো বাংলাদেশ ভস্ম থেকে উড়াল দেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছে। ৫১ বছর পর বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে বিশ্বের ৩৫তম অর্থনৈতিক শক্তিতে। কানাডাভিত্তিক ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্টে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি)-এর আকারের ভিত্তিতে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনামের ওপরে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর পরিসংখ্যান নিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে কানাডার অনলাইন প্রকাশনা সংস্থাটি।
‘দি টপ হেভি গ্লোবাল ইকোনমি’ শীর্ষক ২৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, জিডিপির ভিত্তিতে সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এরপর দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে চীন ও জাপানের অবস্থান। চতুর্থ স্থানে জার্মান এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে ভারত। এই প্রতিবেদন বলছে, ২০২২ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৫তম। এ সময় বাংলাদেশের জিডিপির আকার ছিল ৪৬০ বিলিয়ন ডলার বা ৪৬ হাজার কোটি ডলার। এর আগের বছরে এ অবস্থান ছিল ৪১, সে সময় বাংলাদেশের জিডিপির আকার ছিল ৩৯৭ বিলিয়ন ডলার।
ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্টের তথ্যানুযায়ী- বাংলাদেশের পরে রয়েছে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভিয়েতনাম। এর মধ্যে মালয়েশিয়ার জিডিপির আকার ছিল ৪৩৪ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়ছে, শ্রীলঙ্কার পথে হাঁটছে বাংলাদেশ- এমন একটি প্রচারণা চালাচ্ছে ঘরশত্রু বিভীষণরা। তাদের মদদ জোগাচ্ছে বিদেশি মুরব্বিরা। কিন্তু তাদের মুখে ছাই ছুড়ে দিয়েছে কানাডাভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির পরিসংখ্যান। বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে এক বছরের ব্যবধানে ৪১তম থেকে ৩৫তম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হওয়া তারই প্রমাণ। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনামকে পেছনে ফেললেও এতে আত্মপ্রসাদে ভোগার কোনো অবকাশ নেই। জনসংখ্যার বিচারে অর্থনীতিতে ওই দেশগুলোর সমান হতে গেলে বাংলাদেশকে আরও এগোতে হবে। জোরে এবং আরও জোরে।