শনিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

কিডনি প্রতিস্থাপন

সারা ইসলামের মাকে অভিনন্দন

বাংলাদেশে কিডনি রোগে প্রতি বছরই প্রাণ হারায় বিপুলসংখ্যক মানুষ। দেশে কিডনি প্রতিস্থাপনের সুযোগ থাকলেও কুসংস্কারের কারণে বিপদাপন্ন রোগীদের জন্য কিডনি পাওয়া যায় না। ব্রেন ডেড রোগীর দেহ থেকে কিডনি রোগীদের দেহে প্রতিস্থাপন করলে প্রতি বছর অসংখ্য জীবন রক্ষা পায়। একটি কিডনি হলেই মানুষ যেহেতু বেঁচে থাকতে পারে সেহেতু দুর্ঘটনা কিংবা অন্য কারণে ব্রেন ডেড হয়ে যাওয়া রোগীর দুটি কিডনি দিয়ে দুজনকে বাঁচানো যায়। এ ধরনের কিডনি প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়েছে গত বুধবার। প্রথমবারের মতো ‘ব্রেন ডেড’ রোগীর শরীর থেকে নেওয়া দুটি কিডনি দুজনের শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপন হলো বাংলাদেশে। এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) রেনাল ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলাল। ২০ বছর বয়সী ‘ব্রেন ডেড’ নারী সারার শরীর থেকে নেওয়া দুটি কিডনি দুই নারী কিডনি রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে বুধবার রাতে। একটি কিডনি প্রতিস্থাপন বিএসএমএমইউতে হয়েছে, আরেকটি প্রতিস্থাপন করেছে ন্যাশনাল কিডনি ফাউন্ডেশন। বর্তমানে দুজনই ভালো আছেন। জেনেটিক ডিজিজে আক্রান্ত ২০ বছর বয়সী সারা নামের এক রোগীর বিএসএমএমইউতে সার্জারি হয়। তারপর অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। তিনি যখন ব্রেন ডেডের দিকে যাচ্ছেন তখন তার মাকে কাউন্সিলিং করেন চিকিৎসকরা। তার স্কুলশিক্ষক মা ব্রেন ডেড সারার দুটি কিডনি ও দুটি কর্নিয়া ট্রান্সপ্লান্টের অনুমতি দেন। স্কুলশিক্ষক মা তার কন্যা সারা ইসলামকে হারিয়েছেন জীবনের জন্য। কিন্তু ব্রেন ডেড হয়ে যাওয়া কন্যার দুটি কিডনি প্রতিস্থাপন করে বেঁচে গেল দুটি জীবন। তার দুটি কর্নিয়া দুজন অন্ধ মানুষকে পৃথিবীর আলো দেখার সৌভাগ্য নিশ্চিত করবে। আমরা সারা ইসলামের শিক্ষক মায়ের সিদ্ধান্তকে অভিবাদন জানাই। এ ঘটনা ব্রেন ডেড হওয়া রোগীদের কিডনি দানে স্বজনদের উৎসাহ জোগাবে। যে সিদ্ধান্তের কল্যাণে বেঁচে যাবে অনেক মানুষ। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও যা মহৎ কাজ হিসেবে বিবেচিত হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর