বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

গলার কাঁটা সোলার

বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করুন

সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের সোলার প্যানেল এখন রাজধানীর বহুতল ভবন মালিকদের গলার কাঁটা হয়ে উঠেছে। ২০১০ সালে বিদ্যুৎ নিয়ে টানাপোড়েনের সময় বহুতল ভবনে বিদ্যুতের নতুন সংযোগ পাওয়ার শর্ত হিসেবে সোলার প্যানেল স্থাপনের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। এ সিদ্ধান্তের পেছনে দৃশ্যত ছিল মহান উদ্দেশ্য। ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদার একটি অংশ নবায়নযোগ্য পদ্ধতির মাধ্যমে পূরণ করা। সে সময় দেশের ক্ষুদ্র একটি অংশের মানুষ ছিল বিদ্যুতের আওতায়। তাদের চাহিদা পূরণ করার সামর্থ্য ছিল না বিদ্যুৎ বিভাগ কিংবা সরকারের। ২০০১ সালের পর বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে সারা দেশে খাম্বা বসানো হলেও বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষোভ করায় চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে। ঘটেছে প্রাণহানির ঘটনা। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার দিকেই ছিল তাদের লক্ষ্য। ২০০৯ সালের নির্বাচনের পর ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নেয়। ওই সময় বিদ্যুৎ বিভাগের কর্তাব্যক্তিদের পরামর্শে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বহুতল ভবনে সোলার প্যানেল থাকতে হবে। গত এক যুগে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে আনা এসব নামসর্বস্ব সোলার প্যানেলের বড় অংশই এখন অকেজো। ২০ বছর মেয়াদি এসব ব্যয়বহুল সোলার প্যানেল টিকছে না এক বছরও। বর্জ্য হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ভাঙারি দোকানে। ছাদের ওপর শোপিস হিসেবে থাকা সোলার প্যানেলে শুকানো হচ্ছে কাপড়। সোলার প্যানেল বাধ্যতামূলক করায় মূলত এ প্রযুক্তি আমদানির সঙ্গে জড়িত কিছু ব্যবসায়ী আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। বহুতল ভবনে সোলার প্যানেল আছে কি না তা দেখার নামে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজনের উৎকোচ আদায়ের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। কোটি কোটি টাকা অপচয় হলেও সোলার প্যানেলগুলো কোনো কাজে আসছে না। এ অবস্থায় অপচয় বন্ধে বহুতল ভবনে সোলার সিস্টেম রাখার বাধ্যবাধকতার অবসান হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর