মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

উজান থেকে আসা ঢল

তিস্তা অববাহিকায় বন্যার আশঙ্কা

পানির অভাবে গত কয়েক বছর শুষ্ক মৌসুমে কৃষকের হাহাকারে কেঁদে ওঠে তিস্তা অববাহিকা। সে তিস্তায় হঠাৎ করেই আসতে শুরু করেছে অফুরান পানি। উজানে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় তিস্তা আবারও প্রমত্তা রূপ ধারণ করতে চলেছে। তবে এ অফুরান পানি কৃষকের মুখে হাসি ফোটানোর বদলে তাদের মনে আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। কারণ তিস্তা নদী প্রায় পানিশূন্য হয়ে পড়ায় চারদিকে জেগে ওঠে মাইলের পর মাইল চর। শুধু লালমনিরহাটের তিস্তার চরে চাষাবাদ করেছেন লক্ষাধিক কৃষক। তিস্তা নদীতে উজান থেকে আসা ঢলে প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে কৃষকের চাষ করা সব জমি। অসময়ে পানি এলে তারা আরও বড় ক্ষতির মুখে পড়বেন। কারণ চাষাবাদ করা জমির ফসলের ওপর তাদের বারো মাসের খোরাক জোগাড় হয়। স্মর্তব্য, ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর নীলফামারীর কালীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তিস্তা নদী। লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রামের চিলমারী বন্দর হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে মিশেছে নদীটি। নদীটির দৈর্ঘ্য ৩১৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশে ১৩৫ কিলোমিটার। গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করে উজানের প্রতিবেশী দেশ ভারত একতরফা তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণ করায় বর্ষা শেষেই বাংলাদেশ অংশে তিস্তা মরুভূমিতে পরিণত হয়। বর্ষাকালে বন্যা আর নদী ভাঙনের মুখে পড়ে তিস্তাপাড়ের মানুষ। ভাঙনে ও প্রবল স্রোতে ভেসে যায় ফসলি জমি, বসতভিটাসহ স্থাপনা। বর্ষা শেষ হলে পানি শুকিয়ে মরুভূমিতে পরিণত হয় প্রমত্তা নদী। ঢেউহীন তিস্তার বুকে জেগে ওঠে অসংখ্য বালুচর। বর্ষাকাল শেষ হতেই প্রতি বছরের মতো এ বছরও তিস্তা পানিশূন্য হয়ে মরুভূমিতে পরিণত হয়। তিস্তার বুকে জেগে ওঠা অসংখ্য চরে ভুট্টা, তামাক, গম, পিঁয়াজ, রসুন, মিষ্টিকুমড়া, চিনাবাদামসহ নানা জাতের সবজির চাষাবাদ করেছেন কৃষক। এ ফসল মার খেলে কৃষকের ক্ষুধা নিবারণের পথ স্তব্ধ হয়ে পড়বে। এ বছর আগাম বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে হাওর এলাকায়ও। জলবায়ু পরিবর্তনের অপপ্রভাবে হিমালয়ের বিস্তীর্ণ এলাকার বরফ গলার কারণে সংকট হাতছানি দিচ্ছে; যা থেকে রক্ষায় কৃষকের পাশে দাঁড়াবে প্রশাসন এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর