রমনার ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা মামলার ২২ বছর কেটে গেলেও এখন পর্যন্ত বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। ওই জঙ্গি হামলা ছিল দেশের অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক চেতনার ওপর হামলা। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ওপর হামলা বললেও অত্যুক্তি হবে না। নিষ্ঠুর নির্দয় বোমা হামলা চালিয়ে জঙ্গি নামের বকধার্মিক কাপুরুষরা কেড়ে নেয় ১০টি তাজা প্রাণ। ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল তথা পয়লা বৈশাখের ওই ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলাটি বিচারিক আদালতের রায়ের পর ডেথ রেফারেন্স নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আট বছর ধরে ঝুলছে হাই কোর্টে। আর বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলাটি এখনো নিম্ন আদালতেই বিচারাধীন। ২২ বছরেও মামলা দুটির বিচার শেষ না হওয়ায় হতাশায় ভুগছেন সংস্কৃতিসেবীরা। ২০১৪ সালে হত্যা মামলাটি বিচারিক আদালতের রায়ের পর ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাই কোর্টে আসে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ মামলার পেপারবুকও তৈরি করা হয়। ‘পেপারবুক প্রস্তুত হওয়ার পর করোনার কারণে দুই বছর শুনানি করা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে কয়েক দফা বেঞ্চ পরিবর্তনও হয়েছে। বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলাটির বিচার চলছে ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে। কয়েক দফা আদালত বদলের পর এখন এই কোর্টে বিচারাধীন মামলাটি। এ মামলায় ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারা অনুযায়ী আসামি পরীক্ষা করার জন্য দিন ধার্য রয়েছে। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে আসামিদের আদালতে হাজির করা হচ্ছে না। ফলে এ মামলার কার্যক্রম একরকম বন্ধই রয়েছে। ঢাকার আদালত থেকে দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনার পর থেকে কোনো জঙ্গিকে আদালতে হাজির করা হচ্ছে না। বিলম্বিত বিচার বিচারহীনতার শামিল বলে একটি কথা আদালতপাড়ায় বেশ প্রচলিত। রমনার বোমা হামলা মামলার বিচারে দীর্ঘসূত্রতা প্রকারান্তরে অপরাধীদের সাহসী করে তুলছে। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থেই জঙ্গি-সংক্রান্ত সব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া দরকার। জঙ্গিবাদের শিকড় উৎপাটনে যে বিষয়টি গুরুত্বের অধিকারী।