শনিবার, ৬ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

বজ্রপাত বিসংবাদ

দুর্যোগ উপশমে গবেষণা প্রয়োজন

বজ্রপাত হাজার বছর আগেও ছিল এবং এখনো তা দুনিয়াজুড়ে এক আতঙ্কের নাম। জলবায়ু পরিবর্তনের বিপদ বজ্রপাতের ভয়াবহতা বৃদ্ধি করছে আশঙ্কাজনকভাবে। আমাদের দেশে মোবাইল ফোনের ব্যবহারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বজ্রপাতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে। আয়তনে বাংলাদেশ বিশ্বের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশ হলেও বিশ্বে যত মানুষ বজ্রপাতে মারা যায় তার এক-চতুর্থাংশই বাংলাদেশের। গত  কয়েক বছরে মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ায় ভয় ছড়িয়ে পড়েছে জনমনে। বজ্রপাতে ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের ৩ মে পর্যন্ত ১৩ মাসে দেশে ৩৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মারা গেছেন ২৭৪ জন। যার ২৩৯ জন পুরুষ, নারী ৩৫ ও শিশু ১২ জন। বজ্রপাতে নারীর চেয়ে ছয় গুণ বেশি মারা গেছে পুরুষ, যার অধিকাংশই কৃষক। সবচেয়ে বেশি মারা গেছে সুনামগঞ্জে। বৃহস্পতিবার সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বজ্রপাতে ২০২৩ সালে প্রথম একজনের মৃত্যু হয় ১৫ মার্চ। এর পর থেকে ৩ মে পর্যন্ত মারা গেছেন ৬৬ জন। আহত হয়েছেন আটজন।

এর মধ্যে শুধু কৃষিকাজ করতে গিয়েই মৃত্যু হয়েছে ৫১ জনের। নৌকায় মাছ ধরতে গিয়ে মারা যান ১১ জন। ঝড়ের মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে মারা যায় একজন। বাড়ির আঙিনায় খেলা করার সময় মারা যায় তিনজন। চলতি বছর বজ্রপাতে মৃতের মধ্যে পুরুষ ৬৩ এবং নারী তিনজন। চলতি বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বজ্রপাতে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বজ্রপাতে হতাহতের সংখ্যাবৃদ্ধির পেছনে মোবাইল ফোনের মাত্রাহীন ব্যবহার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি আরেকটি কারণ হিসেবে ভাবা হয় তালগাছসহ উঁচু গাছের সংখ্যা হ্রাসকে। বজ্রপাত হলে তা উঁচু গাছে আঘাত করে এবং এর ফলে মানুষ অনেকাংশে রক্ষা পায়। কীভাবে বজ্রপাতের কবল থেকে মানুষের জীবন রক্ষা করা যায়, সে ব্যাপারে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার প্রয়োজন। আমাদের আশা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা সক্রিয় হবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর