মালয়েশিয়া দেশের অন্যতম শ্রমবাজার। ভৌগোলিক দিক থেকে নিকটবর্তী দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের পরিবেশগত ও সাংস্কৃতিক মিল অন্য যে কোনো শ্রমবাজারের চেয়ে বেশি। যে কারণে বিদেশে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছে তুলনামূলকভাবে মালয়েশিয়া পছন্দনীয় দেশ। কিন্তু পতিত সরকারের আমলে সরকারের পোষ্য সিন্ডিকেটের কারণে ভ্রাতৃপ্রতিম এ দেশটিতে বাংলাদেশের শ্রমবাজার বারবার বন্ধ হয়েছে। অশুভ সিন্ডিকেটের সদস্যরা অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও তাদের থাবা বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী কিছু নেতাকে তাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ব্যবহার করে। তারা সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করছে- সিন্ডিকেট ছাড়া মালয়েশিয়া কর্মী নেবে না। এ অপশক্তি মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চালুর ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, পতিত সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে চরম অরাজকতা, অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়াগামী প্রত্যেক কর্মীকে বাধ্যতামূলকভাবে অতিরিক্ত ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা চাঁদা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে অনলাইন ফি ৫ হাজার মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত বা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হলেও কর্মীদের গুনতে হতো ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। অতিরিক্ত এ টাকা যেত মন্ত্রী-এমপির পকেটে। বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা ও সরকারকে চরম বিব্রত করার জন্য বিদেশে বসে চক্রটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে আবারও সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। জনশক্তি রপ্তানিকারকদের অভিযোগ, পতিত সরকারের আমলে রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স পেতে সিন্ডিকেটের দুই শীর্ষ হোতাকে ৫ কোটি টাকা উৎকোচ দিতে হতো। বর্তমানে যে নতুন সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে পুরোনো সিন্ডিকেটের যোগসাজশে তারা ১৫ কোটি টাকা দাবি করছে। সিন্ডিকেটের কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার অনিশ্চিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে দেশের রেমিট্যান্স আয়ের ক্ষেত্রে এর বিরূপ প্রক্রিয়া পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যা ঠেকাতে সরকারকে সময় থাকতে সক্রিয় হতে হবে।