আইন ও বিচার নিজস্ব গতিতে চলবে। তাতে বাধা সৃষ্টি অপরাধ। অথচ দেশে আকছার তা ঘটছে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা হঠাৎই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাহিনীগুলোর জন্য। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় সামনে রেখে, তার কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল নানা কর্মসূচি দিচ্ছে। প্রভাবশালী নেতারা পলাতক বা জেলে থাকলেও- তাদেরই উসকানি-অর্থায়নে, কর্মী-সমর্থকরা নাশকতার ঘটনা ঘটাচ্ছেন। ইতোমধ্যে এমন কিছু হঠাৎ হামলা, ককটেল নিক্ষেপ, আগুনসন্ত্রাসে ব্যক্তি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নিরীহ মানুষের প্রাণ গেছে। জনমনে ভীতি-আতঙ্ক-অনিশ্চয়তার মেঘ জমেছে। বিশেষত যখন আগামীকালই চব্বিশের জুলাই গণ অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ শেখ হাসিনার বিচারের রায় ঘোষণা। এটাই হবে জুলাই বিপ্লব দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় প্রথম রায়। রায় ধার্যের দিন চিফ প্রসিকিউটর বলেছিলেন, এ রায়ে দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের অবসান ঘটবে। সেটাই কামনা করে গণ অভ্যুত্থানে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার, আহত ও তাদের স্বজন এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত সব স্বৈরাচারবিরোধী ব্যক্তি, গোষ্ঠী, দল। তবে এসব নিয়ে চাপা উৎকণ্ঠা সংক্রমিত হয়েছে সমাজে। দিনটি ঘিরে সমন্বিত নিরাপত্তা ছক কষেছে আইনশৃৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থান-স্থাপনায় পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনীসহ সব বাহিনীর ইউনিট ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের সতর্ক অবস্থান ও টহলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তারপরও চোরাগোপ্তা হামলা, বোমা-গুলি-আগুনসন্ত্রাসের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না দায়িত্বশীল মহল। এ ব্যাপারে ব্যক্তিগত সুরক্ষায় সাবধানতা অবলম্বন প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য। আইনশৃৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্ত সামাজিক প্রতিরোধও কার্যকর হতে পারে। কৃতকর্মের ফলভোগ থেকে কেউ কখনো রক্ষা পায়নি। এটা ইতিহাসের শিক্ষা। তবু তা পণ্ড করতে আবেগতাড়িত হয়ে বা কারও অন্যায় নির্দেশে, প্রলোভনে যারা নাশকতা সৃষ্টি করেন; তারা মূলত নতুন অপরাধে অপরাধী হন। এতে কারও মঙ্গল বয়ে আনে না- এ উপলব্ধি সবারই হওয়া উচিত।