জনপ্রিয় অভিনেতা মীর সাব্বির দীর্ঘদিন ধরে টিভি নাটকে অভিনয়গুণে দর্শক মন জয় করেছেন। নাটক নির্মাণেও তিনি সপ্রতিভ। প্রথমবারের মতো চলচ্চিত্র পরিচালক হয়ে আসছেন তিনি। তার সঙ্গে সমসাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন - পান্থ আফজাল
কেমন আছেন? আজ কোনো শুটিং ব্যস্ততা নেই?
জি, অনেক ভালো আছি। আজ কোনো শুটিং নেই। বাসায় আছি। পরিবারকে সময় দিচ্ছি।
প্রথমবারের মতো একটি অনুদানের চলচ্চিত্র পরিচালনা করছেন। সেটির অগ্রগতি কতদূর?
চলচ্চিত্রটির নাম ‘রাত জাগা ফুল’। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে চলচ্চিত্রটির শুটিং শুরু করি। এখন কাজ শেষ পর্যায়ে। প্রায় ৯৫% কাজ শেষ হয়ে গেছে। চলচ্চিটির কাহিনি, সংলাপ ও চিত্রনাট্যও আমার। একাধিক গানও লিখেছি।
ছবিটি গল্পপ্রধান নাকি নায়ক-নায়িকানির্ভর?
আমার ছবিতে ট্রাডিশনাল নায়ক-নায়িকা তেমন করে নেই। কারণ আমার ছবির গল্পই নায়ক। আর ছবির গল্পের প্রয়োজনে অর্ধেক শুটিং হয়েছে গ্রামের লোকেশনে, আর অর্ধেক শহরে।
এটিতে অভিনয়ে যুক্ত রয়েছেন কারা?
অনেকেই রয়েছেন। দিলারা জামান, শর্মিলী আহমেদ, আবু হুরায়রা তানভীর, জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী রয়েছেন। ওল্ড হোমের একটি ছোট অংশে রয়েছেন দিলারা ও শর্মিলী আপা।
এটিতে গান রয়েছে কয়টি। কে কে গাইছেন?
৩-৪টি রয়েছে। তবে গায়ক-গায়িকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। কিছু গান ডামি করেছি।
আপনার নির্মাণে প্রথম ছবি। প্রত্যাশা কেমন?
আমি তো এতদিন অভিনয় করেছি। কিছু নাটক-ধারাবাহিক নির্মাণ করলেও প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করছি। নিজের মতো করে তৈরি করছি। এখনো ছবির কিছু অংশের শুটিংসহ সম্পাদনা, কালার গ্রেডিং, মিউজিক, সেন্সরসহ নানারকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। তাই আগে থেকে কিছু বলা বা প্রত্যাশা করা যাবে না। দর্শকের সামনে ছবিটি গেলে বোঝা যাবে কেমন হয়েছে। কেমন বানিয়েছি তা দর্শকই মূল্যায়ন করবেন।
ছবিটি মুক্তির বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা রয়েছে?
শুটিং, মিউজিক, কালার গ্রেডিং, ডাবিং শেষ করতে এখনো ২-৩ মাস সময় লাগবে। এরপর সেন্সরসহ সবকিছু চূড়ান্ত করে মিডিয়া সংশ্লিষ্ট মানুষ ও সাংবাদিক ভাই-বোনদের ডাকব। সবকিছু ফাইনাল করার পর দেখব ছবিটি নিয়ে দর্শকের আগ্রহ, মুক্তির উপযুক্ত সময় কখন। এরপরই সিদ্ধান্ত নেব মুক্তি নিয়ে।
অন্য কোনো কাজে ব্যস্ততা কেমন রয়েছে?
প্রায় দুই থেকে আড়াই মাস অন্য কোনো কাজ করিনি। তাই আবারও কিছু কাজ শুরু করছি। এরমধ্যে আমার ‘চোরাকাঁটা’, মাছরাঙায় একটি একক নাটকের কাজসহ কয়েকটি এক ঘণ্টার নাটক ও ধারাবাহিকের কাজ শুরু করেছি।
ইদানীং নাটকের গল্পে ভাঁড়ামো থাকে...
দেখেন এদেশের নাটকে কিন্তু বেশি কমেডি চলে। চ্যানেলে ডিমান্ড, পরিচালক ডিমান্ড, দর্শক ডিমান্ডও বলতে পারেন। কমেডি কঠিন একটা কাজ। সবাই কমেডি চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন না। আমি কেন করছি? সেটার থেকে বেশি দরকার কেন বানাচ্ছে? কারা বানাচ্ছে? আমরা তো এসবের উপকরণ মাত্র!
নাটক নির্বাচনের ক্ষেত্রে আপনি কতটা সচেতন?
আমি হুট করেই কিছু করি না। গল্প, চরিত্র আর অন্যান্য বিষয় মিলে গেলেই তবেই কাজ করি।
নাটকে এই যে ঘুরেফিরে সেই একই মুখ...
মানুষ মোশাররফ করিম, জাহিদ হাসান, চঞ্চল চৌধুরীকে দেখতে চায়। অন্যদিকে নতুনরা কিন্তু তৈরি হচ্ছে খুবই কম। ইদানীং হয় ইম্প্রভাইজিং নাটক। এক্ষেত্রে অভিনয়ে এগিয়ে থাকে পরিচিত মুখ। আর নতুনরা এটা এত সহজেই করতে পারবে না। হুট করে অভিনয়, এটা খুবই কঠিন। নির্মাতা, প্রডিউসার, চ্যানেল চায় বাজেট আর চেনা মুখ নিয়ে নাটক বানাতে। তাই আমাদের কাছেই অফার ঘুরেফিরে আসে। এজেন্সিরও দায়বদ্ধতা আছে। আসলে, নাটক তো এখন সবাই খায়, দেখে না।
শিল্পী সম্মানী নিয়েও সমস্যা আছে। কি বলেন?
এক্ষেত্রে ভারসাম্যহীনতা তো আছেই। একটা লেভেল তৈরি হওয়া প্রয়োজন।
ব্যস্ততার মাঝেও সংসারে সময় কীভাবে দেন?
সবারই কাজের ব্যস্ততা থাকে। সবকিছু সমন্বয় করে করতে হয়। আমিও কাজের বাইরের বাকিটা সময় সংসারে দিই। যদিও পর্যাপ্ত সময় সংসারে দিতে পারি না।