১৭ জানুয়ারি, ২০২১ ২২:৩৯

চাচার মনের চাওয়া ভিন্ন, তিনি রিকশা চালাবেনই

ইফতেখায়রুল ইসলাম

চাচার মনের চাওয়া ভিন্ন, তিনি রিকশা চালাবেনই

লেখকের সঙ্গে সেই চাচা (চাচার অনুমতিক্রমেই ছবি পোস্ট করা)

ভাবলাম চাচার বয়স হয়তো ৭৫-৮০ হবে! কিন্তু চাচার বয়স আরও অনেক কম। চাচি নিজের স্বামীকে এত বয়স্ক মানতেও নারাজ! চাচাকে বললাম, রিকশা চালিয়েন না! চাচা বললেন, অনেকদিনের অভ্যাস না চালালে অসুখ-বিসুখ তাকে আঁকড়ে ধরবে! মনের সাথে রিকশার কোথাও সংযোগ রয়েছে বলে মনে হলো। তাই বাঁধা দিয়ে মনোবেদনার কারণ হতে চাইলাম না!

চাচার দুই ছেলে ও মেয়ে আছে। বড় ছেলে চাচার সাথেই থাকেন। মোটামুটি কষ্টে-সৃষ্টে চলে যায় তাঁদের সংসার। তবে গ্রামে তারা প্রায় সকলেই কম আর বেশি ঋণগ্রস্ত থাকেন। এটা কতিপয়ের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। মন বারবার চেয়েছে চাচা রিকশা চালানো বন্ধ করে দিক, কিন্তু চাচার মনের চাওয়া ভিন্ন, তিনি রিকশা চালাবেনই। অনেকেই তাঁকে ভালবাসেন, রিকশা চালালে তাদের সাথে দেখাও হয়।

সবচেয়ে বড় ও ভাল লাগার বিষয়, চাচা এবং চাচি দু’জনই অনেক অ্যাকটিভ এবং আমাদের শহরের অনেকেই তাদের স্বামী-স্ত্রীর সাথে হাঁটা চলায় পারবেন না বলে আমার বিশ্বাস। রিকশা চালাতে চাচাকে কেউ বাধ্য করেনি, তিনি স্বেচ্ছায় চালান। রিকশা গ্যারেজের মালিক, নাম মাত্র ৩০ টাকা নেন চাচার কাছ থেকে। অনেকে ভালবেসে চাচাকে ভাড়া বাড়িয়ে দেন, অনেকে একসাথে বসে খাবারও খাওয়ান। 

এত ভালবাসা একসাথে উপেক্ষা করার শক্তি চাচার নেই, তাই তাঁর রিকশা চালানোর অভ্যাস চলমান থাকবে। চাচার সাথে প্রায়শই দেখা না হলেও কথা হবে। আরেকটা কথা চাচার সাথে কারো দেখা হলে জোরে জোরে কথা বলবেন, চাচা কানে একটু কম শুনেন।

লেখক : এডিসি, মিডিয়া অ্যান্ড পিআর।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

সর্বশেষ খবর