বরিশালের গৌরনদীতে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সভাপতি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তমের গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ হামলার সময় সেখানে থাকা বিএনপি সমর্থিত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন মিয়ার ব্যবহৃত মাইক্রোবাসও ভাঙচুর করেন তারা। এতে বিএনপির পাঁচ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।আবুল হোসেন মিয়া জানান, সকালে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তার পক্ষে গণসংযোগ করেন আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও শাহজাহান ওমর। গণসংযোগ শেষে কেন্দ্রীয় নেতাদের গাড়িবহরের সঙ্গে তিনিও তার ব্যবহৃত মাইক্রোবাস নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে রওনা হন। গাড়িবহরটি গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডের লোকাল বাস কাউন্টার অতিক্রমকালে সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবায়েরুল ইসলাম সান্টু ভূঁইয়ার নেতৃত্বে একদল ক্যাডার লাঠি-সোঁটা নিয়ে অতর্কিতে গাড়িবহরের ওপর হামলা চালায়। হামলার মধ্যেই সামনের গাড়ি অতিক্রম করে গেলেও বহরের পেছনের দিকে থাকা তার (চেয়ারম্যান প্রার্থী) ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি ব্যাপক ভাঙচুর করে ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। হামলায় মাইক্রোবাসে থাকা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি কালাম খান, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শামীম হাওলাদার, যুবদল নেতা জব্বার খান, সাহাবুদ্দিন বেপারী ও আরিফ হোসেন আহত হন।
আলতাফ হোসেন চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, বহরের সামনে থাকায় তাদের গাড়ি হামলার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। তবে বহরের পেছনে থাকা চেয়ারম্যান প্রার্থীর গাড়িটি ছাত্রলীগ ভাঙচুর করেছে এবং এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় নেতারা তাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি নিজের চোখে না দেখায় ছাত্রলীগের হামলার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি। এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মাহাবুব আলম জানান, ছাত্রলীগের কোনো নেতা-কর্মী তাদের ওপর হামলা করেননি। তাদের একাধিক চেয়ারম্যান প্রার্থী থাকায় নিজেদের বিরোধের দায় ছাত্রলীগের ওপর চাপাতে চাইছেন। গৌরনদী থানার ওসি আবুল কালাম জানান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের গাড়িবহরে হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। নেতারা চলে যাওয়ার পর মিছিল করাকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল হোসেন মিয়া ও তার সমর্থকদের সঙ্গে ছাত্রলীগের কতিপয় নেতার বাদানুবাদ হয়েছে মাত্র। প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আলতাফ চৌধুরী ও শাহজাহান ওমর ঢাকা থেকে বরিশালে যাচ্ছিলেন। এ সময় গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডে গণসংযোগরত উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল হোসেনের অনুরোধে তাদের গাড়িবহর বাসস্ট্যান্ডে কিছু সময়ের জন্য যাত্রাবিরতি করে। পরিচিত না হওয়ায় তাদের গাড়িবহর থামে বাসস্ট্যান্ডে থাকা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে। এতে দলীয় কার্যালয়ে থাকা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ওপর ক্ষুব্ধ হন। উত্তপ্ত পরিস্থিতি দেখে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে হাত উঁচিয়ে অভিবাদন জানিয়ে দ্রুত সেখান থেকে চলে যান। তারা চলে যাওয়ার পর পরই ছাত্রলীগের উত্তেজিত কয়েকজন কর্মী বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল হোসেনের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটির ওপর লাঠি দিয়ে কয়েকটি আঘাত করেন। এতে গাড়িটি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।