সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

নজরদারিতে আসবে সব সরকারি অফিস

---------ইকবাল মাহমুদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নজরদারিতে আসবে সব সরকারি অফিস

দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, আগামী বছর থেকে দুদকের জন্য একটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, সরকারের বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার কাজকর্মের ওপর নজরদারি বাড়ানো। কমিশনের জনবল ও আর্থিক বরাদ্দ বৃদ্ধি। সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে নজরদারি ও ২৫টি সরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পর্যালোচনার জন্য ২৫টি বিশেষ টিম গঠন। এ ছাড়া দুর্নীতি প্রতিরোধে অভিযান পরিচালনায় টাস্কফোর্স গঠন। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান। গত বুধবার আলাপকালে তিনি আরও বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে অনুসন্ধান করবে দুদক। কমিশনের এক হাজার ৩১২ জন অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। এসব কাজে ২৬ কোটি টাকার অতিরিক্ত বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এ অর্থ পাওয়া গেলে ৪২টি জেলায় নতুন অফিস স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া ৫৫৪টি ইউনিয়নে গঠন করা হবে দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিটি। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে পাঁচজন মহাপরিচালকের নেতৃত্বে পাঁচটি বিশেষ দুর্নীতি দমন টিম গঠন করা হয়েছে। ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুদক বর্তমানে ঘুরে দাঁড়ানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগ, হলমার্ক কেলেঙ্কারি, ডেসটিনির অর্থ পাচার, রেলের নিয়োগ কেলেঙ্কারির ঘটনাসহ বড় বড় দুর্নীতির ঘটনা তদন্ত করে দেশের মানুষের আস্থায় আসার কাজটি করছে দুদক। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমি যোগদানের পর থেকে সব সময় চেষ্টা করছি নিরপেক্ষ জায়গায় নিজেকে রেখে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করে যেতে। বাকিটা সবাই বলতে পারবে কতটা পেরেছি। তিনি বলেন, আমাদের কাজের মূল্যায়ন আমরা করব। সফলতা-ব্যর্থতা চিহ্নিত করে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ করব। চেয়ারম্যান আরও বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধই সংস্থাটির মূল উদ্দেশ্য। এরই মধ্যে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কাজকর্মে নজরদারি রাখতে কয়েকটি প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও প্রাতিষ্ঠানিক টিন গঠন করা হবে। সেবা পেতে মানুষের কী কী সমস্যা হচ্ছে, সেগুলো চিহ্নিত করা হবে। প্রয়োজনে নানা পরামর্শও দেবেন। দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ আরও বলেন, উন্নয়নের প্রধান বাধা দুর্নীতি। দুদক তার যাবতীয় শক্তি দিয়ে দুর্নীতি দমনে কাজ করবে। আমাদের যে শক্তি-সামর্থ্য রয়েছে তা দিয়েই গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। বিভিন্ন সময়ে একশ্রেণির কর্মকর্তার অসততা, উপর মহলের চাপ, রাজনৈতিক তদবিরে রাঘববোয়ালদের দায়মুক্তির কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছিল দুদক। প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছিল দুদকের ভাবমূর্তি। ২০০৪ সালের ২১ নভেম্বর তদানীন্তন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে দাতাগোষ্ঠীর চাপে সুশাসন প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে দুদক প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে ওই সরকারের সময় দুদক ছিল নিষ্ক্রিয়। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি দেশে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তন হয়। বাদ পড়েন বিএনপি জোট সরকারের পছন্দে নিয়োগ পাওয়া দুদকের প্রথম চেয়ারম্যান বিচারপতি সুলতান হোসেন খান, ওয়ান ইলেভেনের সরকার দুদকের চেয়ারম্যান হিসেবে সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল হাসান মশহুদ চৌধুরীকে নিয়োগ দেয় ২০০৭ সালের ৩ মার্চ। ২০০৯ সালের এপ্রিলে চার বছরের মেয়াদ পূর্ণ করার আগেই তিনি পদত্যাগ করলে তার স্থলাভিষিক্ত হন সাবেক সচিব গোলাম রহমান। গোলাম রহমান চলে যান ২০১২ সালে। তারপর চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পান এম বদিউজ্জামান। তিনি মেয়াদ পূর্ণ করে ২০১৫ সালের ১৪ মার্চ দুদক ছাড়ার পর চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পান সাবেক সিনিয়র সচিব ইকবাল মাহমুদ।

সর্বশেষ খবর