বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করুন : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিদিন ডেস্ক

গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগ  করুন : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল ইতালির রোমে আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (ইফাদ) পরিচালনা পর্ষদের অধিবেশনে বক্তব্য দেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূর করতে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগের জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

গতকাল সকালে ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট (ইফাদ)-এর ৪১তম পরিচালনা পরিষদের সভার উদ্বোধনী অধিবেশনে মূল বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘ফ্রাজিলিটি টু লং টার্ম রেসিলেন্স : ইনভেস্ট ইন সাসটেইনেবল রুরাল ইকোনমি।’ খবর বাসসের

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগ একটি প্রধান বিবেচ্য বিষয় এবং বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা ছাড়া এটি অর্জন করা যাবে না। তিনি  বলেন, দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূরীকরণে উন্নয়ন সহযোগীদের আরও একটু উদার হতে হবে। তিনি বাংলাদেশ ও উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে সহায়তা অব্যাহত থাকার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করে বলেন, অগ্রগতির এই ধারা অব্যাহত রাখতে ইফাদ গুরুত্ব্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইফাদের সহায়তার ও সহযোগিতার মডেলটি জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা থেকে অনেক ভিন্ন। ইফাদের এই মডেলটি মানবতায় এখনকার মতো অনাগত দিনগুলোতেও কাজ করে যাবে। তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা স্থাপন ছাড়া টেকসই উন্নয়ন অর্জন করা যাবে না। গ্রামীণ সামাজিক ও জলবায়ুগত স্থিতিশীলতার উন্নয়নে একটি ব্যাপকভিত্তিক টেকসই গ্রামীণ অর্থনীতি প্রয়োজন।

শেখ হাসিনা টেকসই গ্রামীণ অর্থনীতি তৈরিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদিভাবে স্থিতিশীলতা আনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রায় এক দশক ধরে সুশাসন থাকায় বাংলাদেশ ভাগ্যবান। তিনি বলেন, আমরা সতর্কতার সঙ্গে চার বছরের আর্থসামাজিক প্রবৃদ্ধি হিসাব করে আমাদের কৌশল নির্ধারণ করেছি এবং গত নয় বছর ধরে এটি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। আমরা খুবই সতর্কতার সঙ্গে পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে চাহিদা ও প্রয়োজনের মধ্যে সমন্বয় করেছি।

প্রধানমন্ত্রী-বিসলে-বৈঠক : বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যু সম্পর্কে দাতা সংস্থাগুলোর আগ্রহ হ্রাস পাওয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই মানবিক সংস্থাটি বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

‘রোহিঙ্গাদের খাওয়ানোর ব্যাপারে দাতা সংস্থার আগ্রহ কমে যাচ্ছে। তবে, আমরা জাতিসংঘের ব্যবস্থার আওতায় দাতা সংস্থার মধ্যে এই আগ্রহটা ধরে রাখতে চেষ্টা করছি। কিন্তু, এটি চালিয়ে যাওয়া ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে।’

গতকাল রোমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালকের বৈঠকের পর পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ডেভিড বিসলেকে উদ্ধৃত করে একথা বলেন।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ডব্লিউএফপি বাংলাদেশে বসবাসরত প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে খাওয়ানোর ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেন, গত ছয় মাসে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৮০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের খাবার বিতরণ করেছে ডব্লিউএফপি। ডব্লিউএফপির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী তিনি বলেন, প্রতি মাসে রোহিঙ্গাদের খাবার সরবরাহ করতে ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন পড়ে।

শহীদুল হক বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আরেকটি বিষয়ের প্রতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ডব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচালক, সেটি হচ্ছে, বর্ষকালে বাংলাদেশের যেস্থানে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে সেখানে ভূমিধসের সৃষ্টি হতে পারে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজন হলে কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গাদের অস্থায়ীভাবে ভাসানচর এলাকায় স্থানান্তর করা হবে।

ডব্লিউএফপির নির্বাহী পরিচালক রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রচারণার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই দুবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেছি।

ডেভিড বিসলেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিজভূমিতে সফল প্রত্যাবাসনের জন্য ইতিমধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এবং তিনি এই চুক্তির সফল বাস্তবায়নের জন্য মিয়ানমারের প্রতি চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অনুরোধ করেন।

সর্বশেষ খবর