শুক্রবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা
বর্বর হত্যাকাণ্ডে চালক

বাসের ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়া শিশুটির মৃত্যু

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

বাসের ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়া শিশুটির মৃত্যু

কুষ্টিয়ায় সড়ক পার হচ্ছিলেন মা। থেমে থাকা বাসটি হঠাৎই ধাক্কা দেয় তাকে। মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে যায় শিশু আকিফা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল তার নিথর দেহ নিয়ে বাবা-মার কান্না —রোহেত রাজীব

কুষ্টিয়ায় বাসচালকের খামখেয়ালিপনায় আহত শিশুটিকে বাঁচানো যায়নি। বাবা-মার কোল খালি করে সে পাড়ি জমিয়েছে না-ফেরার দেশে। এক বছর বয়সী শিশু আকিফা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ভোরে মারা যায়। মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজশাহী থেকে ফরিদপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসা গঞ্জেরাজ পরিবহনের একটি বাস শহরের চৌড়হাস মোড়ের কাউন্টারে এসে থামে। সে সময় থেমে থাকা বাসের সামনে দিয়ে এক বছরের শিশুকন্যা আকিফাকে কোলে নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন মা রিনা বেগম। হঠাৎ কোনো হর্ন ছাড়াই চালক খোকন বাসটি চালিয়ে দেন। বাসের ধাক্কায় মায়ের কোল থেকে রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে আহত হয় শিশু আকিফা। বাসের ধাক্কায় রিনা বেগমও আহত হন। এরই মধ্যে বাসটি দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহত মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে নিয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাথায় গুরুতর চোট পাওয়ায় শিশুটির অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে সন্ধ্যায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। বুধবার বেলা ১১টায় শিশু আকিফার অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। আকিফা কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস এলাকার সবজি ব্যবসায়ী হারুন উর রশিদেও মেয়ে। শিশুটির বাবা মুঠোফোনে অভিযোগ করে বলেন, বাসের ড্রাইভার ইচ্ছা করে তার মেয়েকে চাপা দিয়ে হত্যা করেছেন। তিনি বলেন, ‘আপনারা ভিডিওটি দেখলেই বুঝতে পারবেন, বেপরোয়া বাসচালক আমার স্ত্রীকে তিনবার ধাক্কা দিয়েছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাক্কায় আমার মেয়ে তার মায়ের কোল থেকে পড়ে যায়নি। তৃতীয়বার ধাক্কা মারার পর মেয়ে মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে যায়।’ হারুন উর রশিদ এ ঘটনায় দায়ী বাসচালকের ফাঁসি দাবি করেন। তিনি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপও কামনা করেন। এদিকে, স্থানীয় সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনের নেতারা অবিলম্বে দায়ী বাসচালককে গ্রেফতার ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম জহির বলেন, ‘আমি নিজেও ভিডিওটি দেখেছি। যেটা হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। ভিডিও দেখে মনে হচ্ছে ড্রাইভার ইচ্ছা করেই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। থানায় জিডি হয়েছে। জিডি অনুযায়ী তদন্ত চলছে। বাসের চালক ও হেলপারের ঠিকানা পাওয়া গেছে। পরিবারের সদস্য এলে মামলা নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর