শুক্রবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আফগানিস্তানের সঙ্গে বিপর্যস্ত ব্যাটিং

টাইগারদের সামনে আজ ভারত

আফগানিস্তানের সঙ্গে বিপর্যস্ত ব্যাটিং

আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকাল বোলিংয়ে স্বরূপে ফেরেন সাকিব আল হাসান। তুলে নেন চার উইকেট। ১০ ওভারে দেন ৪২ রান। ছবি : এএফপি

মরু রাজ্যে এর আগেও খেলেছে। সেটা ছিল শারজাহতে। এবারই খেলল দুবাই ও আবুধাবিতে। দুবাইয়ের অভিষেক ম্যাচটি সোনালি ফ্রেমে বাঁধানো। আবুধাবিতে বিপর্যস্ত আফগান স্পিনে। সুপার ফোরে ভারতের বিপক্ষে আজ খেলতে নামার আগে নিজেদের ঝালাই করে নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করল ব্যাটিং ব্যর্থতায়। আফগান স্পিনে নাকাল হয়ে ১১৯ রানে গুটিয়ে হেরে যায় ১৩৬ রানের পর্বতসমান ব্যবধানে। এ নিয়ে এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের কাছে হারল দুবার। এর আগে হেরেছিল ২০১৪ সালে ঢাকায়। সব মিলিয়ে দুই দলের হার-জিতের ব্যবধান সমান ৩টি করে। সুপার ফোরে অবশ্য ২৩ সেপ্টেম্বর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন মাশরাফিরা। ম্যাচটি গুরুত্বহীন হলেও

ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং করে নিজের ২০তম জন্মদিন পালন করে রশিদ খান। দুবাইয়ে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর ম্যাচটিকে ঘিরে ব্যাপক আগ্রহের তৈরি হয় প্রবাসীদের। প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে ম্যাচটি দেখতে আবু জায়েদ স্টেডিয়ামে প্রবাসীরা উপস্থিত হয়েছিলেন আজমান, আল আয়মান, শারজাহ থেকে। উপস্থিতজনের অধিকাংশই আবার আবুধাবির বাসিন্দা। লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়ে এক খণ্ড বাংলাদেশে পরিণত করেছিল স্টেডিয়ামটিকে। প্রিয় ক্রিকেটারদের উৎসাহ দিতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গগনবিদারি আওয়াজে উৎসাহ যুগিয়েছেন এসব প্রবাসী। কিন্তু দিন শেষে হাসিমুখে ফিরে যেতে পারেননি নিজ নিজ আবাসে।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ মুখোমুখিতে খুব সহজে জিতেছিল বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের ১ অক্টোবরে ম্যাচ জিতেছিল ১৪১ রানের পর্বতসমান ব্যবধানে। এরপর দুই দল ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলেনি গত দুই বছরে। গত জুনে ভারতের দেরাদুনে অবশ্য টি-২০ সিরিজে বিধ্বস্ত হয়েছিল টাইগাররা। সেই দৃষ্টিকোণে গতকালের ম্যাচটি ছিল অনেকটাই প্রতিশোদের। ভারতের বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচে নামার আগে নিজেদের প্রস্তুত করারও ম্যাচ এটি। এমন একটি ম্যাচে টস হেরে ফিল্ডিং করে মাশরাফি বাহিনী। কব্জির আঘাতে তামিম ইকবাল ফিরে গেছেন দেশে। তার জায়গায় অভিষেক হয় আরেক বাঁ হাতি নাজমুল হোসেন শান্তর। মুস্তাফিজুর রহমানকে বিশ্রাম দেওয়ায় অভিষেক হয় ১০টি টি-২০ খেলা আবু হায়দার রনির। রনির অভিষেক স্বর্ণালি হলেও ব্যর্থ ছিলেন নাজমুল। রনি নেন ২ উইকেট। নাজমুল করেন ৭ রান। সাড়ে তিন বছর পর রঙিন পোশাকে খেলতে নেমে ব্যর্থ মুমিনুল হকও। করেছেন মাত্র ৯ রান। গুরুত্বহীন ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে সুবিধা করতে পারেনি আফগানরা। রনির জোড়া আঘাতে শুরুতে থমকে পড়ে। এরপর সাকিবের ঘূর্ণিতে বেসামাল হয়ে ৪০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৮ রান সংগ্রহ করে। হাশমতউল্লাহ শাহিদি উইকেটের একপ্রান্ত আগলে রশিদ ও গুলবদন নাইবকে নিয়ে টেনে নিয়ে যান। রশিদ, হামিদ উল্লাহ ও গুলাম টাইগার বোলারদের নিয়ে ছেলে খেলায় মেতে ১০ ওভারে যোগ করেন ৯৭ রান। অবশ্য শেষ ৫ ওভারে আরও বেশি আগ্রাসী ছিলেন রশিদ ও গুলাম। দুজনে জুটি বেঁধে ৩০ বলে যোগ করেন ৫৭। বিশ্বসেরা লেগ স্পিনার রশিদের ছিল গতকাল ২০তম জন্মদিন। জন্মদিনটিকে উপভোগ করেন অসাধারণ ব্যাটিংয়ে। মাত্র ৩২ বলে খেলেন ৮ চার ১ ছক্কায় ৫৭ রানের অপরাজিত ইনিংস। গুলবদন ৪২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ৩৮ বলে। মিডল অর্ডারে ব্যাট করে দলকে বিপর্যয় থেকে রক্ষা করেন হাশমত উল্লাহ ৫৭ রানের ইনিংস খেলে।

শুরুতে রনি, রুবেল ও সাকিবরা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করলেও শেষ দিকে সুর, তাল ও লয় হারিয়ে ফেলেন। আলগা বোলিং করায় মাশরাফি ও রুবেলের শেষ তিন ওভারে আফগানরা সংগ্রহ করে ৫৯ রান! রশিদের ব্যাটিং ঝড়ে আফগানিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ২৫৫। আফগান তাণ্ডবের মুখেও দারুণ বোলিং করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। একমাত্র টাইগার বোলার হিসেবে ১০ ওভারের পুরো স্পেল শেষ করে ৪২ রানের খরচে নেন ৪ উইকেট।  ২৫৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে দুই আফগান স্পিনার রশিদ ও মুজিবের বৈচিত্র্যময় স্পিনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। রশিদ, গুলবদন, মুজিব, রহমত শাহদের সাঁড়াশি আক্রমণে একমাত্র সাকিব ও মাহমুদুল্লাহ যা একটু প্রতিরোধ গড়েন। সাকিব ৩২ রানে সাজঘরে ফিরেন রশিদের আর্মারে লেগ বিফোর হয়ে। ২৭ রান করে মাহমুদুল্লাহ বোল্ড হন রশিদের গুগলিতে।

সর্বশেষ খবর