বৃহস্পতিবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিশ্ব গণমাধ্যমে খবর

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের সংবাদ গুরুত্ব পেয়েছে বিশ্ব মিডিয়ায়। গতকাল দুপুরে রায় ঘোষণার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রভাবশালী গণমাধ্যম এই রায়ের খবর প্রকাশ করেছে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে। কলকাতার আনন্দবাজার থেকে শুরু করে বিবিসি, এপি, আল জাজিরা, হিন্দুস্তান টাইমস, রয়টার্স, দা গলফ টুডেসহ বিশ্বের অনেক গণমাধ্যমে রায়ের খবর এসেছে। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলার লক্ষ্য ছিল তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব। ওই হামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২২ জন মারা যান। আহত হন কয়েক শ নেতা-কর্মী। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচলেও তিনি শ্রবণশক্তি হারান।

দীর্ঘ ১৪ বছর পর ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় গতকাল ঘোষণা করেন বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দীন। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। আর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবনের রায় দেন।

রায় ঘোষণার পর পরই বিশ্ব মিডিয়া এই খবর প্রকাশ করে।  কলকাতার আনন্দবাজার তাদের অনলাইনের প্রতিবেদনে শিরোনাম করে ‘হাসিনার ওপর হামলা : মৃত্যুদণ্ড ১৯, খালেদা-পুত্রসহ যাবজ্জীবন ১৭ জনের’। তারা লিখেছে, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে খুনের চেষ্টার দায়ে তৎকালীন খালেদা জিয়া সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুত্ফুজ্জামান বাবর, উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও খালেদা-পুত্র তারেক রহমানসহ ১৭ জনের। বিবিসি অনলাইনে ‘২০০৪ সালে সমাবেশে ভয়াবহ হামলার ঘটনায় বাংলাদেশে ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড’ শিরোনামে খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় ২০০৪ সালে রাজনৈতিক সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনার দায়ে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই সময়ে ক্ষমতায় থাকা বিএনপির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে তার অনুপস্থিতিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বার্তা সংস্থা এপি শিরোনাম করেছে ‘রাজনৈতিক সমাবেশে হামলার ঘটনায় বাংলাদেশে ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড’। এতে বলা হয়, শেখ হাসিনা অল্পের জন্য ওই সময় প্রাণে বেঁচে যান। রায় ঘোষণার পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত লুত্ফুজ্জামান বাবরের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরে বলা হয়, সাংবাদিকদের কাছে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ‘আল্লাহ সব কিছু জানেন। আমি এর সঙ্গে জড়িত ছিলাম না’। কাতারভিত্তিক আল জাজিরা তাদের প্রতিবেদনের শিরোনাম করে, ২০০৪ সালের হামলার ঘটনায় ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড। দ্বিতীয় শিরোনামে ছিল, ২০০৪ সালের হামলার ঘটনায় বিরোধী দলের নেতা তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল বাংলাদেশের আদালত। হিন্দুস্তান টাইমস শিরোনাম করে, ২০০৪ শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলায় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলেকে যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া হয়েছে, মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে ১৯ জনকে। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পলাতক ছেলে তারেক রহমানকে ২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলার ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স-এর শিরোনাম হচ্ছে ‘২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলার রায়ে বিরোধী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বাংলাদেশের আদালত।’ সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গলফ টুডে ‘২০০৪-এর হামলায় বাংলাদেশে ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড’ শিরোনামে লিখেছে, বাংলাদেশের একটি আদালত বতর্মান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। বিরোধী দলের শীর্ষ পলাতক নেতাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর