ভালো ঋণ গ্রহীতাদের বিশেষ সুবিধার ঘোষণা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মাধ্যমে দেশের ঋণখেলাপিদের নিয়মিত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। খেলাপিরা মাত্র ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ৯ শতাংশ সুদহারে ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য ১০ বছর সময় পাবেন। এক্ষেত্রে প্রথম এক বছর কোনো কিস্তি দিতে হবে না।
গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করে এই নির্দেশনা দিয়েছে। এর ফলে ঋণ খেলাপিদের গণহারে ছাড়ের সুযোগ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ছোট, মাঝারি বা বড়- সব ঋণ খেলাপিই পুনঃতফসিলের সুযোগ পাবেন। ঋণ খেলাপিদের আগের অনারোপিত সব সুদ মাফ করে দেওয়া হবে। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ঋণ খেলাপিদের সুবিধা দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। ‘ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা’ শীর্ষক সার্কুলারে বলা হয়েছে, বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে ব্যবসায়ী/শিল্পোদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্যাংকের ঋণ অনেক ক্ষেত্রেই নিয়মিতভাবে পরিশোধিত হচ্ছে না এবং সংশ্লিষ্ট ঋণ বিরূপভাবে শ্রেণিকৃত হয়ে পড়ায় ঋণ বিতরণ ও আদায় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে উৎপাদনশীল খাতসহ অন্যান্য খাতে স্বাভাবিক ঋণ প্রবাহ বজায় রাখাসহ ব্যাংকিং খাতের বিরূপভাবে শ্রেণিকৃত ঋণ নিয়মিত আদায়ের লক্ষ্যে কতিপয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরভিত্তিক ঋণ খেলাপিরা সুযোগ পাবেন। ছাড় গ্রহণের জন্য আগামী ৯০ দিন অর্থাৎ ১৬ আগস্টের মধ্যে খেলাপিরা আবেদন করবেন। ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে আগামী ১০ বছর পর্যন্ত ঋণ পরিশোধের সুযোগ পাবেন। তবে প্রথম এক বছর কোনো টাকা পরিশোধ করতে হবে না। আর পুনঃতফসিলকৃত ঋণের সুদহার হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ বা ব্যাংকের কস্ট ফান্ডের সঙ্গে ৩ শতাংশ যোগ করে।
খেলাপি ঋণের সুদ ব্যাংক আয় দেখাতে পারে না। তাই পৃথক হিসেবে রাখতে হয়। পৃথক হিসেবে রাখা সব সুদ মাফ করে দেওয়া হবে। এই সুবিধা গ্রহণকারীরা ব্যাংক থেকে আবার নতুন করে ঋণ নিতে পারবেন।
খেলাপির তালিকা চেয়েছে হাই কোর্ট : হাই কোর্ট আগামী ২৪ জুনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে ঋণখেলাপি ও অর্থ পাচারকারীদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে। গতকাল হাই কোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছে।