বুধবার, ১২ জুন, ২০১৯ ০০:০০ টা

কঠিন চ্যালেঞ্জে টাইগাররা

কঠিন চ্যালেঞ্জে টাইগাররা

আশঙ্কাই সত্যি হলো শেষ পর্যন্ত। বৃষ্টিতে প  হয়ে গেল ম্যাচ। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দুই দলই ১ পয়েন্ট করে পেল। টাইগারদের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন অনেকটাই ম্লান হয়ে গেল। বাংলাদেশের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। এখন সমীকরণ অনেকটা এমন হয়েছে যে, শেষ চারে খেলার স্বপ্ন পূরণ করতে হলে হয়তো পরের প্রতিটি ম্যাচেই জিততে হবে!

গতকাল রাত থেকেই বৃষ্টি ব্রিস্টলে। সকালে একবার থেমেও গিয়েছিল। সকাল সাড়ে ১০টায় মাঠের দুই আম্পায়ার রিচার্ড ইলিনয়র্থ ও রিচার্ড কেটলবোরাক মাঠ পরিদর্শনে নামেন, টস করা যায় কিনা দেখতে। তার কিছুক্ষণ পর আবারও শুরু হয়ে যায় বৃষ্টি। দুপুর দেড়টায় দ্বিতীয় দফায় মাঠ পরিদর্শন শেষে জানিয়ে দেওয়া হয় ম্যাচটি পরিত্যক্ত। যদিও কার্টেল ওভার হওয়ার জন্য ৪টা ১০ মিনিট পর্যন্ত (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ১০ মিনিট) অপেক্ষা করার সময় ছিল। কিন্তু ব্রিস্টল কাউন্টি গ্রাউন্ডের আউটফিল্ডে অনেক বেশি পানি জমে যায়। সে কারণে অনেক আগেই ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের কোচ স্টিভ রোডস বলেন, ‘আমরা খুবই হতাশ। আমাদের লক্ষ্যই ছিল এ ম্যাচ থেকে পুরো ২ পয়েন্ট পাব। কিন্তু তা হলো না। ১ পয়েন্ট হারাতে হলো আমাদের। এটা খুবই হতাশার। তবে বাস্তবতা মেনে নিতেই হবে। এখন সামনের ম্যাচগুলোয় আমাদের জিততেই হবে। পরের ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে।’

ম্যাচ না হওয়ায় হতাশ শ্রীলঙ্কাও। এ মাঠে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তাদের আগের ম্যাচটিও মাঠে গড়ায়নি। দুই ম্যাচ থেকে ২ পয়েন্ট পায় লঙ্কানরা। সব মিলে ৪ পয়েন্ট নিয়ে এখন তারা বাংলাদেশের ওপরেই থাকল। সংবাদ সম্মেলনে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দিমুথ করুণারতেœ বলেন, ‘চেয়েছিলাম ম্যাচটি যাতে মাঠে গড়ায়। আমরা খেলতেই এখানে এসেছিলাম। কিন্তু হলো না। কী আর করার। এখনো আমরা আশা রাখছি শেষ চারে যাওয়ার।’

দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ মিশনটা শুরু হয়েছিল দুর্দান্তভাবে। কিন্তু পরের দুই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হেরে গিয়ে বিপদে পড়ে যায়। তাই ব্রিস্টলের ম্যাচটিকে ‘পাখির চোখ’ করে রেখেছিলেন টাইগাররা। লঙ্কানদের হারিয়ে পূর্ণ ২ পয়েন্ট নিয়েই লড়াইয়ে ফিরতে চেয়েছিলেন মাশরাফিরা। কিন্তু ম্যাচটি পরিত্যক্ত হওয়ায় বাংলাদেশের জন্য বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাওয়ার রাস্তাটা যেন আরও কঠিন হয়ে গেল। তবে এবারের বিশ্বকাপের ফরম্যাটটাই অন্য রকম। প্রতিটি দল প্রতিটি দলের সঙ্গে খেলবে। কখন কোন ম্যাচে ‘অঘটন’ ঘটে বলা যায় না। তাই এখনো আশা ছাড়ছেন না কোচ স্টিভ রোডস। তিনি বলেন, ‘জানি না এখন সেমিফাইনালের রাস্তাটা কতটা চ্যালেঞ্জিং হয়ে গেল। তবে এটা অনেক বড় টুর্নামেন্ট। এখনো অনেক ম্যাচ বাকি আছে। অনেক কিছুই ঘটতে পারে।’

বাংলাদেশের সামনে এখন আরও পাঁচ ম্যাচ আছে। পরের ম্যাচে টনটনে প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ ছাড়া আফগানিস্তান, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেলতে হবে।

তবে এবারের বিশ্বকাপে বৃষ্টি বাধায় আরও অনেক ম্যাচই প- হতে পারে। স্টিভ রোডস বলেন, ‘ইংল্যান্ডের আবহাওয়া নিয়ে কিছু বলার নেই। কখন বৃষ্টি হবে কেউ জানে না। এ নিয়ে টুর্নামেন্টের আয়োজকরাই যেন সমস্যায় পড়েছেন।’ সে কারণেই হয়তো এখনো আশা ছাড়ছেন না কোচ। এর আগে বৃষ্টি অনেকবারই বাংলাদেশকে সুখবর দিয়েছে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে যদিও অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুরন্ত জয়ে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছিল, তবে নেপথ্যে ছিল ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পরিত্যক্ত ম্যাচ থেকে পাওয়া ১ পয়েন্ট। ২০১৭ সালে এই যুক্তরাজ্যের মাটিতেই আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বৃষ্টি আবারও আশীর্বাদ হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে। প্রথমে ব্যাট করে ওভালে বাংলাদেশ মাত্র ১৮২ রানে অলআউট হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া মাত্র ১ উইকেটে করেছিল ৮২ রান। যেন নিশ্চিত হেরে যাওয়া সেই ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় ১ পয়েন্ট পায় বাংলাদেশ। তারপর কার্ডিফে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক জয়ে প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালের টিকিট পায় টাইগাররা। এবার সেই বৃষ্টিই যেন শক্র হয়ে গেল!

সর্বশেষ খবর