মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা
খেলাপিদের ধরা হবে

এক অঙ্কের সুদ হার বাস্তবায়নের নির্দেশ অর্থমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ডিসেম্বর ২০১৮-এর তুলনায় জুন-২০১৯ শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ অবশ্যই কমে এসেছে। অন্যদিকে যারা ব্যাংক থেকে অন্যায়ভাবে টাকা নিয়েছে তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এ অভিযোগে শুধু ব্যাংকের এমডি-চেয়ারম্যানরাই নন, অনেকের পরিবারসহ জেলে রয়েছেন। গতকাল সচিবালয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, রূপালী, অগ্রণী এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর এমডি ও চেয়ারম্যানদের সঙ্গে দীর্ঘ তিন ঘণ্টার বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে  কবির, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদারসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ঋণের সুদের হার এক অঙ্ক বাস্তবায়ন করেছে। এখন বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বসে এক অঙ্কের সুদ হার নিশ্চিত করা হবে। তবে এক্ষেত্রে প্রজ্ঞাপন দেওয়া হোক আর না হোক এটা বাস্তবায়ন করতে হবে। এ সময় এক অঙ্ক সুদ হার সব ব্যাংক বাস্তবায়ন করেছে কিনা-জানতে চাইলে মন্ত্রী এমডি-চেয়ারম্যানদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা হাত তুলে বলেন কারা কারা বাস্তবায়ন করেছেন? এর পরিপ্রেক্ষিতে উপস্থিত এমডি ও চেয়ারম্যানরা হাত উঁচিয়ে এতে সম্মতি দেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার বা দেশ চালাতে গেলে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে। আমরা আজকে ব্যাংকিং সেক্টর নিয়ে কথা বলেছি। প্রথমেই আমরা সরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ নিয়ে কথা বলেছি। আমি যেদিন শপথ নিয়েছিলাম সেদিনই বলেছিলাম খেলাপি ঋণ বাড়বে না। আপনারা (সাংবাদিকরা) লিখেছেন, বেড়েছে। কিন্তু আমার কাছে যে তথ্য আছে তাতে দেখা যাচ্ছে খেলাপি ঋণ বাড়েনি। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের ৩০ দশমিক ৩৮ শতাংশ, চলতি বছরের জুনে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ। জনতা ব্যাংকের অনেক বেড়ে গেছে। জনতা ব্যাংকের ছিল ৩৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। জুন পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ৩৫ শতাংশ। অগ্রণী ব্যাংকের ছিল ২০ দশমিক ২৫ শতাংশ। এটা জুনে হয়েছে ১৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। রূপালী ব্যাংকের ছিল ১৯ দশমিক ২১ শতাংশ। জুনে হয়েছে ১৭ শতাংশ। বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণে কোনো পরিবর্তন আসেনি। আগের বছরের ডিসেম্বরে মতোই ৫৮ দশমিক ২৫ শতাংশে জুন, ২০১৯ শেষ করেছে। বিডিবিএল ডিসেম্বরে ছিল ৫৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। জুনে দাঁড়িয়েছে ৪৫ দশমিক ৭২ শতাংশ। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ডিসেম্বরে ছিল ১৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ। জুন শেষে দাঁড়িয়েছে ১৭ শতাংশ। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) ডিসেম্বরে ছিল ২৩ দশমিক ১৬ শতাংশ।

এ ব্যাংকের ক্ষেত্রে কত শতাংশ কমেছে বা বেড়েছে সেটা নির্দিষ্ট করে বলেননি অর্থমন্ত্রী। সরকারি ব্যাংকগুলো সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে এনেছে জানিয়ে তিনি বলেন, সব ব্যাংকে আমরা সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনব। সিঙ্গেল ডিজিট না হলে খেলাপি ঋণ বাড়ে। ফলে ব্যবসায়ী ও ঋণগ্রহীতা কেউ লাভবান হন না। ঋণগ্রহীতা ও ব্যবসায়ী উভয়কেই লাভবান করতে আমরা এটি করতে চাইছি। এটি করলে আমরা লাভবান হব।

সর্বশেষ খবর