স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় খুন হয়েছেন ১৫১ জন শিক্ষার্থী। সর্বশেষ বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার নিহতের ঘটনা ঘটে। শিক্ষাবিদরা বলছেন, এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে শক্ত অবস্থান নেওয়া উচিত। সূত্র জানায়, ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গোলাগুলিতে সাত খুনের ঘটনা ঘটে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী খুনের ঘটনা সেটিই ধরা পড়ে প্রথম। এ ঘটনার চার বছর পর শফিউল আলম প্রধানসহ অন্যান্য অভিযুক্তরা আদালতে সাঁজাপ্রাপ্ত হন। কিন্তু পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে তারা মুক্তি পান। সবচেয়ে বেশি খুনের ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই। সেখানে খুন হয়েছেন অন্তত ৭৪ জন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৯, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাতজন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) দুজন করে, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং হজরত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন করে শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনা ঘটেছে। এসব খুনের ঘটনার কোনো অপরাধীরই শাস্তির মুখোমুখি হয়নি আজও। যে কটি মামলার রায় হয়েছে সেসব ক্ষেত্রে বেশিরভাগ আসামি লাপাত্তা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মন্জুরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, শিক্ষাঙ্গনে খুনখারাপি বন্ধ করতে চাইলে সবার আগে আমাদের যেতে হবে মূলে। এখন যা চলে তা পথভ্রষ্ট রাজনীতি। আমাদের রাজনৈতিক নেতারা মানুষের সেবা ও সমাজকল্যাণের যে আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করতেন, তারা সেই আদর্শ হারিয়ে ফেলেছেন। এখন তাদের উদ্দেশ্য অর্থ ও প্রতিপত্তি। আর বিশ্ববিদ্যালয়ও হয়ে গেছে রাজনীতির জায়গা। শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। উপাচার্যরা হন সরকারি দলের। সরকারি দলের শিক্ষকরাও ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ভূমিকা পালন করেন। আর প্রক্টর পালন করেন সরকারি পুলিশ কর্মকর্তার ভূমিকা। এদের আর রাজনৈতিক অঙ্গসংগঠনের মধ্যে আর কোনো পার্থক্য থাকে না। প্রশাসন আর পুলিশ যদি আইনশৃঙ্খলার যথাযথ ভূমিকা রাখত তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো হত্যাকাে র ঘটনা ঘটত না। আবরার ফাহাদের নিথর দেহ ধরাধরি করে নিয়ে যাওয়ার ছবি এখন ভাইরাল। কিন্তু সব ঘটনার হয়তো আর ছবি থাকে না। যেমন বুয়েট ক্যাম্পাসেরই সাবেকুন নাহার সনির কথা অনেকেরই মনে থাকার কথা। ২০০২ সালে ছাত্রদলের দুই পক্ষের গোলাগুলির মাঝে পড়ে নিহত হন তিনি। এ ঘটনার ১৩ বছরেও পুলিশ প্রধান অভিযুক্ত মুকি ও টগরকে গ্রেফতার করতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। ২০১০ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলে শিবিরকর্মীদের হাতে খুন হন ছাত্রলীগকর্মী ফারুক। লাশ পড়ে থাকে ম্যানহোলের ভিতরে। একই কায়দায় তিন বছর আগে লতিফ হলের ডাইনিংয়ের পাশের ড্রেনে পাওয়া যায় লিপুর লাশ। আবার ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ৯ বছর আগে নিহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিক। ২০১২ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কর্মীদের নির্যাতনে অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ নিহত হন। ছয় বছর পর অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রলীগকর্মীকে মৃত্যুদ দিয়েছে হাই কোর্ট। যদিও সেই রায় এখনো কার্যকর হয়নি বলে জানা গেছে। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ পড়ে, রক্ত ঝরে কিন্তু শাস্তি পায় না কেউই। মামলা হয়, আটকও হয় কিছুক্ষেত্রে, কিন্তু কিছুদিন পর সব ধামাচাপা পড়ে যায়। মামলা ঝুলে বছরের পর বছর, এক সময় সবাই সব কিছু ভুলেই যায়।
এ অবস্থার পুনরাবৃত্তি হতে দেখা যায় দেশের প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী খুনের ঘটনায়। বিশ্ববিদ্যালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯২ সালের ১৩ মার্চ। ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষের সময় সন্ত্রাসবিরোধী মিছিল করছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন নেতা মঈন হোসাইন রাজু ও তার বন্ধুরা। সেই মিছিলে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। নিহত হন রাজু। এ মামলায় এখনো চার্জশিট জমা দিতে পারেনি পুলিশ। সেই রাজুর স্মরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে একটি ভাস্কর্য করা হয়েছে। কিন্তু এত বছরেও শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস বন্ধ হয়নি।
শিরোনাম
- বিসিবি থেকে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন সালাহউদ্দিন
- প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিল প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিলো সরকার
- হবিগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যা করে আদালতে আত্মসমর্পণ স্বামীর
- উট ও স্বর্ণ থেকে সাম্রাজ্য: দাগোলোর হাতে এখন অর্ধেক সুদান
- সৌদিতে আরও ১৭ হাজার নারী সংগীত শিক্ষক প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন
- খামেনির ছবি পোড়ানোর পর যুবকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার
- মেডিক্যাল শিক্ষকদের মূল বেতনের ৭০ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা
- বিপিএলে ৫ দল, শুরু ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে
- বিএনপিতে যোগ দিলেন শহীদ মীর মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ
- ঢাবিতে সহিংসতায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৪০৩ জনকে শোকজ
- দুই দল যা-ই বলে, সরকার তা-ই করে : মির্জা আব্বাস
- পদোন্নতি পাচ্ছেন এক হাজারের বেশি বিচারক
- ইরাক আগ্রাসনের ‘মূল হোতা’ সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের মৃত্যু
- তরিকুল ইসলাম ছিলেন দলের দুর্দিনের কাণ্ডারি: তৃপ্তি
- জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনে নিয়োগ পেলেন বিচারপতি আহমেদ সোহেল
- ‘১৭ বছর রাজপথে নির্যাতিত ত্যাগী কর্মীদের চোখে আজ আশার আলো’
- নির্বাচনের সময়ে ভুয়া খবর প্রচারে জেল-জরিমানা
- বগুড়ার ডিবির সাবেক ইনচার্জসহ দুইজনের প্রত্যাহার আদেশ বাতিল
- বগুড়ায় উদ্ধার হওয়া ৩৯ ককটেল নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন টিকিট কালোবাজারি গ্রেফতার
বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫১ খুন শাস্তি পায়নি কেউই
মাহবুব মমতাজী
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শরীরচর্চা ও সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ প্রস্তাব বাতিল প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিলো সরকার
১ ঘণ্টা আগে | জাতীয়
প্লে স্টোরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রেটিং পেল বাংলালিংকের ‘মাইবিএল সুপার অ্যাপ’
২ ঘণ্টা আগে | কর্পোরেট কর্নার