শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা
আবরারের দাদার আর্তনাদ

আমার নাতিটা কনে গেল রে

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

আমার নাতিটা কনে গেল রে

বুয়েটছাত্র আবরারের কথা উঠলেই হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন দাদা আবদুল গফুর বিশ্বাস। বুক চাপড়াতে চাপড়াতে  বলেন, ‘আল্লারে... আমার নাতিটা... কনে গেল রে...।’ গতকাল তার সঙ্গে দেখা হলে এভাবেই তিনি আর্তনাদ করতে থাকেন।

আবরারের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। দাদা আবদুল গফুর বিশ্বাস নাতির এমন মর্মান্তিক মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। নিজের পরিবারে আবরার ছিলেন সবার চোখের মনি। একপর্যায়ে চোখের পানি মুছে দাদা বলেন, ‘ও কোনো রাজনীতির সঙ্গে ছিল না। পড়াশোনাতেই ছিল মনোযোগ। পঞ্চম, অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি  পেয়েছে। মাধ্যমিকে বৃত্তি পেয়েছে। পরে নটর ডেমে ভর্তি হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষায় পাস করেছে। পরে বুয়েটে ভর্তি হয়েছে।’ গলা ধরে আসে আবরারের দাদার। পরে তার বেশিরভাগ কথাই বোঝা যায় না। তবে এতটুকু বোঝা যায়, আর অন্য সব দাদার মতোই ভালোবাসতেন নাতিকে। যতদিন বেঁচে থাকবেন নাতি হারানোর বেদনা, ক্ষত কেউ মুছে ফেলতে পারবে না তার ভারাক্রান্ত হৃদয় থেকে। তার কথায়, প্রথমে আবদুল গফুর বিশ্বাসকে তার মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি। পরে জানতে পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। আবদুল গফুর বিশ্বাস স্বপ্ন দেখতেন তার নাতি অনেক বড় ইঞ্জিনিয়ার হবে। কিন্তু জীবনসায়াহ্নে এসে এমন গভীর বেদনা তাকে বয়ে বেড়াতে হবে কে জানত! কোনো ধরনের প্রস্তুতি ছাড়া মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণও হয়েছিলেন আবরার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় দ্বিতীয় হয়েছিলেন। কিন্তু নিজের ইচ্ছাতেই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন।

প্রসঙ্গত, বুয়েটছাত্র আবরার হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে সারা দেশে বিক্ষোভ চলছে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আবরার হত্যাকান্ডে মর্মাহত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর