বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
পুলিশ হেফাজতে মারধর

আওয়ামী লীগ নেতা বিপুকে ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

মঙ্গলবার পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্ত হওয়ার পর গতকাল দুপুর ৩টায় যশোর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপুকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। দলীয় ও পারিবারিক উদ্যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা  গেছে। দুপুরে যশোর শামস-উল হুদা স্টেডিয়ামে তাকে নেওয়ার জন্য হেলিকপ্টার এসে পৌঁছলে সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারসহ বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত হন। এ সময় বিপু বলেন, ‘আমি নির্দোষ। অথচ আমাকে চোরের মতো পেটানো হয়েছে। আপনাদের কাছে দোয়া চাই, যাতে সুস্থ হয়ে ফিরতে পারি’। অবশ্য পুলিশ সুপার মুহাম্মাদ আশরাফ হোসেন দাবি করেছেন, ‘পুলিশ হেফাজতে বিপুকে কোনো প্রকার মারধরের ঘটনা ঘটেনি। উনি একজন সম্মানিত লোক, জিজ্ঞাসাবাদের কিছু নিয়ম আছে, সেগুলো মেনেই তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ওনাকে মারার কোনো কারণ থাকতে পারে না। এরপরও অভিযোগ যেহেতু আসছে, সে কারণে সিনিয়র কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে একটি তদন্ত টিম করে দেওয়া হয়েছে। কোনো ব্যত্যয় হলে তা তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরই বলা সম্ভব হবে’। অভিযোগ করা হয়েছে, ১১ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে শহরের পুরাতন কসবা এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় সাদা পোশাকে থাকা কয়েক পুলিশ সদস্যের সঙ্গে তুচ্ছ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের গোলযোগ হয়। এ সময় পুলিশ কনস্টেবল ইমরান নিজের পরিচয়পত্র দেখিয়ে ওই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ কর্মীরা তাকে মারধর ও অপহরণ করে পাশের আবু নাসের স্মৃতি সংসদ ক্লাবে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় সেখানে শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপুও ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা ইমরানকে উদ্ধার ও আওয়ামী লীগ নেতা বিপুসহ চারজনকে হেফাজতে নেয়। মঙ্গলবার দুপুরে মাহমুদ হাসান বিপুকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে রাতেই বিপুকে অসুস্থ অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিপুর অভিযোগ, পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তাকে বেধড়ক মারপিট করা হয়েছে।

 বিপুকে চিকিৎসা প্রদানকারী অর্থোপেডিক সার্জন আবদুর রউফ জানান, বিপুর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার ডায়াবেটিসও ধরা পড়েছে, সুস্থ হতে সময় লাগবে। যশোর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, বিপুকে নির্যাতন করেই পুলিশ ক্ষান্ত হয়নি, সোমবার রাতে শহরের অনেক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করেন তিনি। এদিকে পুলিশ সদস্যকে মারপিটের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিপুর সঙ্গে আটক শাহিনুজ্জামান তপু ও ইমামুল হককে আসামি করা হয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানান।

সর্বশেষ খবর