বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, স্বাধীনতার চেতনা আজ ভূলুণ্ঠিত। একদলীয় শাসনব্যবস্থা গণতন্ত্রের ভুয়া মোড়কে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। নির্বাচনের আগের রাতে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে পার্লামেন্ট ও সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। আমাদের স্বাধীনতার সব আশা ভেঙে খান খান করেছে এই অবৈধ সরকার। এই ৫০ বছরে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা দূরে থাকুক, বিভক্ত করা হয়েছে। স্বাধীনতাকে সংহত করার চেয়ে আরও দুর্বল করা হয়েছে। জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা ভেঙে চুরমার করা হয়েছে। রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেকসোরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গতকাল বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। লন্ডন থেকে স্কাইপের মাধ্যমে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এর উদ্বোধন করেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আয়োজনে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়। মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতা কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়। এ দেশে যারা সোনালি ফসল ফলায়, যারা পণ্য উৎপাদন করে, যারা শ্রম দিয়ে অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে তাদের সবার। আসুন এই ৫০ বছর পরে আমরা নতুন করে শপথ নেই ১৯৭১ সালের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের। যা আমাদের একটি উদার গণতান্ত্রিক, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এগিয়ে যাবে অন্ধকার থেকে আলোর জগতে। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, তুরস্ক, জাপান, জাতিসংঘ, ইউএসএইড, আন্তর্জাতিক রেড ক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আবদুস সালামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, দলের ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বক্তৃতা করেন।
বিএনপি মহাসচিব তাঁর বক্তৃতার শুরুতে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম-স্বাধিকার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ রণাঙ্গনের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা-লাখো ভাই-মা-বোনের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
দলের কারাবন্দী চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, পাঁচ শতাধিক গুম-খুন এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশি হামলা, লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ, গুলি, গ্রেফতার, কারাগারে নির্যাতনে সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর মৃত্যু, মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত কারাগারের কন্ডেম সেলে অন্তরীণ দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা লুৎফুজ্জামান বাবর এবং লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যুবরণের বিষয়গুলো তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। আমরা সুবর্ণজয়ন্তীর বিভিন্ন কর্মসূচিতে সেই সত্যকে স্পষ্ট করতে চাই, যে সত্য আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও যুদ্ধকে মহিমান্বিত করেছিল।