সোমবার, ১৫ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

ভাসাও তরণী হে কর্ণধার

সমরেশ মজুমদার

ভাসাও তরণী হে কর্ণধার

শৈশববেলা যে শেষ হচ্ছে তা বোঝার আগে পিতামহ ডেকে বলেছিলেন, ‘শোন, আজ থেকে তুমি আর শিশু নও। তোমার বয়স এখন বারো, আজ থেকে তোমার কৈশোর শুরু হলো। এই  কিশোরবেলা হচ্ছে পৃথিবীকে চোখ দিয়ে দেখার, মন দিয়ে জানার সময়।’

তখন আমার বারো বছর বয়স। যে বয়সে পা দিলে শৈশব শেষ হয়ে যায়। কৈশোর শুরু হয়ে যায়। আর কে না জানে, কৈশোর কখন তরুণ বেলায় পৌঁছে যায় বুঝতে না বুঝতে যৌবন জানান দেয়। একটু আশাবাদী গলায় বলা যায়, কিশোর মানুষের জীবনের সিংহদ্বার।

বাংলাদেশ প্রতিদিন আজ শৈশব পেরিয়ে বালক বয়স ডিঙিয়ে কৈশোরে পা দিল। এখন তার সামনে পৃথিবীর সব দরজা খুলে যাবে, নিজে যেমন আলোকিত হবে তেমনি আলোয় ভরিয়ে দেবে তার পাঠকের মনোজগতে।

সঠিক সংবাদপত্রের চরিত্র কী হবে তা নিয়ে তর্কের কোনো কারণ নেই। কিন্তু মুশকিল হলো, নানান চাপ এবং বদ্ধ ধারণার কারণে সেই চরিত্র সব সময় সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। আমি বেশ অনেকটা সময় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে জড়িয়ে আছি। কখন যে ওই পরিবারের একজন হয়ে গিয়েছি তা নিজেই জানি না। কিন্তু এই সময়ে আমি কখনো কোনো মালিন্য, কোনো সমঝোতার কালো ছায়া বাংলাদেশ প্রতিদিনের মানসিকতার ওপর পড়তে দেখিনি। এটা আমাদের গর্বিত করে, সে তার মুঠোয় আকাশ ধরেছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন আজ বারো বছরে পা দিল, সে এখন সজীব কিশোর-তরুণ। এই সময় এবং তার আগামী দিনের যৌবনকাল একটি সৎ সাহসী সংবাদপত্রের চরিত্র বজায় রাখুক, এই প্রার্থনা করছি। সামনে শান্তির পরিবার যে সব সময় থাকবেই, এমন কথা নেই। কিন্তু হে কর্ণধার, তবু তরণী ভাসাতে হবে সততার সঙ্গে।

লেখক : কথা সাহিত্যিক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর