মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

সম্প্রীতি বিনির্মাণ হয় মানবিকতায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্প্রীতি বিনির্মাণ হয় মানবিকতায়

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণ হয় মানবিকতায়, সশস্ত্র বল প্রয়োগে নয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত রাষ্ট্রে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধারাবাহিকভাবে বিনষ্ট হচ্ছে। এটা আমাদের জাতির জন্য খুবই বেদনা ও লজ্জাজনক। এটা মুক্তিযুদ্ধের গৌরবকে ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে। সারা দেশে পূজামন্ডপে হামলা, সহিংসতা ও নৈরাজ্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

এতে জাতির নৈতিক জাগরণে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন তিনি। এর মধ্যে রয়েছে- সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা, মন্দির ভাঙচুর, দোকানপাট লুটের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার উৎস, কারণ ও প্রতিকারের উপায় নির্ধারণে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করা। পূজা মন্ডপের সুরক্ষা প্রশ্নে পুলিশ ও প্রশাসনের গাফিলতি, অসহযোগিতা ও সময়ক্ষেপণের কৌশলে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা। নিরস্ত্র প্রতিবাদকারীদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণ ও হত্যার দায়-দায়িত্ব নির্ধারণের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন। সাম্প্রদায়িক সহিংসতা যেন ভূ-আঞ্চলিক পরাশক্তির রাজনৈতিক মেরুকরণের দাবার গুটি বা পরাশক্তির নির্মম খেলায় পরিণত হতে না পারে- সে লক্ষ্যে জাতীয় জাগরণের উদ্যোগ গ্রহণ। আ স ম রব বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের রাষ্ট্রীয় চেতনা থেকে বিচ্যুত হয়ে শুধু ক্ষমতাকেন্দ্রিক অনৈতিক ও জিঘাংসামূলক অপরাজনীতি বিস্তার করেছি।

জাতির মনস্তত্ত্বে যে অমানবিক অন্যায্য সংস্কৃতি গেঁথে দিয়েছি- তারই নির্যাস আজকের এই পরিণতি।

তিনি আরও বলেন, বল প্রয়োগে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ, জনগণকে ভয়ে সন্ত্রস্ত রাখা, ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করা এবং প্রতিপক্ষকে শত্রু আখ্যায়িত করে বিনা বিচারে হত্যা করা, গায়েবি মামলায় কারান্তরীণ করা, মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনসহ সব অন্যায়কে জোর করে ন্যায্যতা দেওয়ায় জাতীয় জীবন থেকে মানবিকতা সহিষ্ণুতা, ধর্মীয় সম্প্রীতি পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সহমর্মিতাকে আমরা বিদায় করে দিয়েছি। আমরা এখনো পারস্পরিক দোষারোপ ও শাসকের অহমিকাপূর্ণ বয়ানের চৌহদ্দিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকে আবদ্ধ রেখেছি। আমাদের এই ধ্বংসপ্রাপ্ত মূল্যবোধ ও জাতীয় অনৈক্যের ফাটলে ভূ-আঞ্চলিক কোনো পরাশক্তি বারুদ রেখে আগুন ধরিয়ে আমাদের জাতীয় অস্তিত্ব যে বিপন্ন করে দিতে পারে, এই সামান্য বিবেচনাও আমাদের কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে না। এক্ষেত্রে আমাদের জরুরি রাজনৈতিক কর্তব্য হচ্ছে- জনগণের কাছে রাষ্ট্রীয় মালিকানা হস্তান্তরসহ গণতান্ত্রিক নৈতিক ও মানবিক সংস্কৃতিকে পুনরুজ্জীবিত করা।

সর্বশেষ খবর