সোমবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

খালেদা লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত : মেডিকেল বোর্ড

পুনরায় রক্তক্ষরণ হলে মৃত্যুঝুঁকি জার্মানি যুক্তরাষ্ট্র অথবা যুক্তরাজ্যে চিকিৎসার পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক

খালেদা লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত : মেডিকেল বোর্ড

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। লিভারে স্বাভাবিক রক্ত পরিচালন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়ে দফায় দফায় রক্তক্ষরণ হচ্ছে। টিপস (ট্রান্সজাগুলার ইন্ট্রাহেপাটিক পরটোসিস্টেমিক শান্ট) প্রক্রিয়ায় লিভারে রক্ত পরিচালন চাপ কমাতে হবে। এই চিকিৎসা মূলত যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্রেই সম্ভব। গতকাল গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের বাসভবন ফিরোজায় তাঁর দলীয় চিকিৎসক টিমের সদস্যরা এসব তথ্য জানান। তাঁরা বলেন, লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে শুধু দেশের না উপমহাদেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর চেয়ে বেশি কিছু আমাদের করার নাই। কিন্তু লিভারে আবারও রক্তক্ষরণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আগামী সপ্তাহে ৫০ ভাগ বাড়তে পারে, ৬ সপ্তাহে ৭০ ভাগ বাড়বে, যা  তাঁর জন্য মৃত্যু ঝুঁকি তৈরি করবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী। বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম মোহসীন, অধ্যাপক ডা. শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও ডা. আল মামুন। মেডিকেল বোর্ডের পক্ষ থেকে সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কথা বলেন মেডিকেল বোর্ডের প্রধান প্রফেসর ডা. এম এফ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ম্যাডামের বর্তমান অবস্থা নিয়ে মানুষের মধ্যে স্বচ্ছ কোনো ধারণা নেই। তিনি কী অবস্থায় কী পর্যায়ে আছেন; আমরা আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে সঠিক তথ্য জানানোর দায়িত্ববোধ থেকে কথা বলছি। খালেদা জিয়া গত ১২ নভেম্বর দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তির পর বাসায় চলে যান। হঠাৎ আমাদের কাছে খবর আসে তিনি খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তিনি কয়েক কদম হাঁটতে গিয়ে হাঁফিয়ে পড়ছেন। এ রকম অবস্থা দেখে আমি ও ডা. জাহিদ হোসেন গিয়ে দেখি তিনি অত্যন্ত ফ্যাকাসে ও দুর্বল হয়ে পড়েছেন। আমরা বাসা থেকে ব্লাড স্যাম্পল কালেকশন করি। সকালে আমরা রিপোর্টে দেখি তাঁর রক্তে হিমোগ্লোবিন কয়েক দিন আগে যা ছিল, তার থেকে অনেক কমে গেছে। তাৎক্ষণিক আমাদের কাছে মনে হয়েছে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করানো দরকার। করোনাকালীন জটিলতা থেকে বের হওয়ার পর তাঁর নতুন কিছু রোগ শনাক্ত হয়। তার মধ্যে প্রধান ছিল লিভারে সমস্যা। দ্বিতীয় দিন (১৩ নভেম্বর) প্রথমে আমরা তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে কেবিনে নিয়ে যাই। ওইদিন রাত ৯টার দিকে হঠাৎ ব্যাপক রক্তবমি হয় তাঁর। সঙ্গে সঙ্গে আমরা যারা চিকিৎসক ছিলাম সবাই উপস্থিত হয়ে দ্রুত সেন্ট্রাল ভেনাস লাইন, ভার্সিরিয়াল লাইনসহ কিছু লাইফ লাইন চালু করি। দ্রুত ব্লাড স্যাম্পল নেওয়া হয়। তাঁর ব্লাড প্রেসার কমে যায়; যা ওপরে ছিল ৯০ নিচে ৫০ এর মতো। পালসও দ্রুত ওঠানামা করছিল। তিনি কলাপস করে গিয়েছিলেন। আমরা বুঝতে পারি যে, তাঁর খাদ্যনালিতে ম্যাসিভ রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে। এটি ১৩ নভেম্বর রাত সাড়ে ৯টা ২০-এর দিকের ঘটনা। এরপর আমরা তাঁর লাইফ সেভিং পারসাস হিসেবে আইভি ফ্লুইড দেওয়া শুরু করি এবং দ্রুত রক্তের ব্যবস্থা করে রক্ত দিতে দেই। আমাদের লাইফ সেভিং করার জন্য লিভারের রোগটার হেমোরেইজ হলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। ওই সময় প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে উনাকে দুই ব্যাগ পিআরভিসি, ফ্রেশ ফ্রোজেন প্লাজমা এবং আইভি ফ্লুইড দেওয়া হয়। ওই সময় উনাকে দ্রুত এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে ব্লিডিং সোর্স বের করাটা ছিল লাইফ সেভিং পারপাস। কিন্তু তাঁর প্রেসার ও পালস এত নিচে নেমে গিয়েছিল সেটা সম্ভব হয়নি। ডিপ সিডেনেশন ছাড়া এটা করা যায় না। আমরা রাত ২টার দিকে তাঁর প্রেসার ও পালস মোটামুটি স্বাভাবিক মাত্রায় আনার পর প্রফেসর এম এস আরেফিনকে দ্রুত খবর দেই। তিনি এসে এভারকেয়ারের সব চিকিৎসক বিশেষ করে অধ্যাপক শাহাবুদ্দীন তালুকদার যার অধীনে ম্যাডাম ভর্তি আছেন, ডা. জাফর ইকবালসহ সব ডাক্তার ও নার্স মিলে এন্ডোস্কোপি করা হয়। ওই সময় তাঁর সিরোসিস অব লিভার পরিপূর্ণভাবে ধরা পড়ে। আলট্রাসনো, সিটিস্ক্যান রিপোর্টে যা আসে, যে লিভার তার কার্যকারিতা রক্ষা করতে পারছিল না। তাঁর রোগ খুঁজে বের করে ছয়টি ব্যান্ডিং করে রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে সমর্থ হই। তিনি ডায়াবেটিস ও হার্ট ফেইলিউরের রোগী। ওই কঠিন অবস্থার মধ্য থেকে আমরা প্রাথমিকভাবে তাঁর চিকিৎসা দিতে সমর্থ হই। ২৪ ঘণ্টা তাঁকে মনিটরিংয়ে রেখে নতুন কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। যাতে রক্তক্ষরণ কমানো যায়। ১৭ তারিখে আবার খাদ্যনালিতে ব্লিডিং শুরু হয়। আবার হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করি। প্রথমবার হিমোগ্লোবিন ৫.৫ হয়ে গিয়েছিল। চার ব্যাগ রক্ত দেওয়ার পর সেটা ১০-এর কাছাকাছি যায়। ১৭ তারিখ আবার হিমোগ্লোবিন কমে ৭.৮-এ চলে আসে। আমরা রক্ত দিচ্ছি। সিরোসিস অব লিভার রোগীদের সর্বশেষ চিকিৎসা হিসেবে আমরা আইভি ফ্লুইড ইনফ্লুয়েশন দিতে থাকি। এই ইনজেকশনটা পাঁচ দিনের বেশি দেওয়া যায় না। ২১ তারিখ মনে হলো তাঁর ব্লিডিং বন্ধ হয়েছে। প্রথম পাঁচ দিনের পর রিব্লিডিং হলে নিয়ন্ত্রণের চান্স কমে যায়। ২৩ তারিখ থেকে আবার ব্লিডিং শুরু হলো। তাঁর ব্লাড প্রেসার ও হিমোগ্লোবিন কমেছে। ২৪ তারিখ অবস্থা এত খারাপ হলো যে কালো এবং ফ্রেশ ব্লাড যেতে থাকল। আমরা তখন বাংলাদেশের দক্ষ চিকিৎসকদের ডেকে নিয়ে আসি। ২৪ তারিখ রাতে আবার জেনারেল ওটিতে নেওয়া হয়। যাতে যে কোনো সিরিয়াস কম্পিøকেশন মোকাবিলা করতে পারি। আবার বাধ্য হয়ে এন্ডোস্কোপি করা হয়। এবার দেখা যায়, একটু নিচ থেকে ব্লিডিং হচ্ছে। কিন্তু ব্লিডিং পয়েন্ট শনাক্ত করা যায়নি। কোলনস্কোকপি করে আমরা অবাক হয়ে যাই, যে তাঁর সমস্ত কোলন রক্ত জমাট বেঁধে কালো হয়ে আছে। সেটা ক্লিন করে করে ওপরে উঠতে হয়। কোলন যেহেতু বিশাল একটি প্যাসেজ সেটা ক্লিন করে ওপরে রক্তের সোর্স খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। কিন্তু তৃতীয় ব্লিডিংয়ের সোর্স পর্যন্ত যাওয়া সম্ভব হয়নি। যেভাবেই হোক লাইফ সার্ভিস মেডিসিন দিয়েছি, ব্লাড ট্রান্সমিশন করেছি। বর্তমানে ম্যাডাম যে অবস্থায় আছেন এটাকে বলা যায় ইউ ডু স্যাম স্পেসিফিক। পুনরায় রক্তক্ষরণ হলে একটাই উপায় আছে টিআইপিসের মাধ্যমে চিকিৎসা। এই টেকনোলজিটা বাংলাদেশে নাই। শুধু বাংলাদেশেই নয় সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়াসহ আশপাশের দেশেও এই চিকিৎসা নাই। এটা হাতে গোনা দুয়েকটা অ্যাডভান্স হেলথ সেন্টার এই চিকিৎসা করে। আশার বিষয় হলো, গত ২৪ ঘণ্টায় ম্যাডামের ব্লিডিংটা হয়নি। অবস্থা স্থিতিশীল আছে। আমরা যেটা আগে বলেছি, এখনো বলছি, বিশ্বের সেরা সেন্টারগুলোতে এ ধরনের রোগীর ওপর হাজার হাজার ডেটা আছে। রোগীর ম্যানেজমেন্ট যদি ফেইলিউর হয় তাহলে পরবর্তীতে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এখনই যদি উন্নত চিকিৎসা না দেওয়া হয় পরবর্তী সপ্তাহে ৫০ শতাংশ ও এবং পরবর্তী ছয় সপ্তাহে ৭০ শতাংশ ব্লিডিং হতে পারে। তারপরও যদি ব্লিডিং হয় তাহলে বলতে হয় একটা অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। আমরা যাতে পরিষ্কারভাবে বলতে পারি, আমরা এই উপমহাদেশের সেরাটা দিচ্ছি। কেন জানি ম্যাডাম যখনই অসুস্থ হচ্ছেন তিনি ডেথ পয়েন্টে চলে যাচ্ছেন। তাঁর মতো একটা রোগী কভিড পরবর্তী জটিলতায় ১৭ দিন কাটিয়েছেন হাসপাতালে। প্রতিদিন ব্লাড তিনি নিজের চোখে দেখছেন। আমরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাঁকে সেবা দিয়েছি। তাঁর মনোবল দৃঢ় আছে। ওই সময় আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। এখন আর আমরা আত্মবিশ্বাসী নই। ম্যাডাম নিজেও ডা. জাহিদের কাছে জানতে চেয়েছেন তাদের মুখ কালো কেন? আমরা ম্যাডামকে বলেছি না ম্যাডাম। আমরা মনে করি, সঠিক তথ্যটা সঠিকভাবে তুলে ধরা জরুরি। এক প্রশ্নের জবাবে এফ এম সিদ্দিকী বলেন, ম্যাডামের যে অবস্থা সেখানে একটি বিষয় হলো যে, অনেক রক্ত দিয়ে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে পারবেন না। আবার পুনরায় রক্তক্ষরণ হবে। তাই হিমোগ্লোবিন একটা লেভেলে ধরে রাখতে হয়। আশঙ্কা করছি, আবার পুনরায় রক্তক্ষরণ হলে সেটা বন্ধ করার টেকনোলজি আমাদের নেই। সেক্ষেত্রে ব্লিডিং হয়ে মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে। এক্ষেত্রে আমরা অসহায় বোধ করছি। সাংবাদ সম্মেলনে ডা. শামসুল আরেফিন বলেন, ম্যাডামের লিভারের ভিতর নরমাল চ্যানেলগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। যার ফলে পোর্টাল প্রেসার বেড়ে যায়। খাদ্যনালিতে যেটা থাকে ফুঁসে ওেেঠ এবং সিভিয়ার ব্লিডিং হয়। রিব্লিডিং হলে আমাদের যেসব ওষুধ ব্যবহার হয় সেটা আমাদের দেশে সহজলভ্য নয়। ম্যাডামের বর্তমানে যে অবস্থা সেটার চিকিৎসার জন্য জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে সেন্টার আছে। যেখানে এ ধরনের রোগের চিকিৎসা সম্ভব।

খালেদা জিয়া ছাড়া দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা আসবে না- ফখরুল : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়াকে ছাড়া দেশে শান্তি, শৃঙ্খলা, গণতন্ত্র কোনোটাই ফিরে আসবে না। দেশের ১৮ কোটি মানুষের দরকার বেগম খালেদা জিয়াকে। তাঁকে ছাড়া কেউ এখানে শান্তি-স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারবে না। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ, গুরুতর অসুস্থ। প্রতিদিন চিকিৎসকেরা তাঁর জীবন রক্ষার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। তাঁকে অনতিবিলম্বে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিন। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে এই দাবি জানাচ্ছি। কিন্তু আমরা বুঝি না, মাথায় আসে না, সমস্যাটা কোথায়? কেন আপনারা (সরকার) বার বার আইনের কথা বলছেন? আইনে তো তাঁর বিদেশ যেতে বাধা নেই! আইন তো ভুল দেখাচ্ছেন আপনারা। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গতকাল খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। আয়োজক সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, কৃষকদলের সভাপতি হাসান জাফির, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল।

বিদেশে পাঠানোর দাবি বিএমএর সাবেক নেতাদের : বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে বিভিন্ন জটিল রোগে নিদারুণ অসুস্থ খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে বিদেশে সর্বাধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার দাবি জানান। বিএমএর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে এম আজিজুল হক ও সাবেক মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত। তথাপি এক ফরমায়েশী রায়ে তাঁকে কারাবন্দী রেখে তাঁর চিকিৎসায় করা হয়েছে চরম অবহেলা। যার ফলশ্রুতিতে তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। বর্তমানে তাঁর লিভার, কিডনি মারাত্মকভাবে আক্রান্ত। তাঁর রক্তক্ষরণ হচ্ছে এবং রক্ত পরিসঞ্চালন করতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন থেকে তিনি ডায়াবেটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, চক্ষু রোগে আক্রান্ত। অতি সম্প্রতি তিনি কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হন। কভিড পরবর্তী বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। এরূপ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতেও তাঁর চিকিৎসা বারংবার ব্যাহত হয়েছে। বেগম জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর আবেদন সত্ত্বেও সরকার অমানবিক আচরণ করছে। চিকিৎসকদের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন সময় বলা হয়েছে বর্তমান এ পরিস্থিতে সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে তাঁকে বিদেশে আরও সর্বাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে। কিন্তু সরকার কিছুতেই কর্ণপাত করছে না। বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতা চিকিৎসকদের মধ্যে আরও রয়েছেন, অধ্যাপক গাজী আবদুল হক, অধ্যাপক বায়েছ ভূঁইয়া, অধ্যাপক মোস্তাক রহিম স্বপন, অধ্যাপক রফিকুল কবীর লাবু, অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক হারুন-আল রশিদ, অধ্যাপক আজিজ রহিম, অধ্যাপক শামিমুর রহমান, অধ্যাপক ডা. আবদুল মান্নান মিয়া ও অধ্যাপক সৈয়দ মো. আকরাম হোসেনসহ শতাধিক চিকিৎসক।  

নেত্রীকে মেরে ফেলার চেষ্টা চলছে : সেলিমা : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেছেন, ‘আজ সারা দেশের মানুষ ক্ষোভে জ্বলছে। কারণ জনগণের নেত্রীকে আজ বিনা চিকিৎসায় মেরে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে সরকারি নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন।

সর্বশেষ খবর