শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

ব্যাপক নিরাপত্তা রাজধানীজুড়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলা নববর্ষ পয়লা বৈশাখ উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে রাজধানীজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে রমনা বটমূল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ছাড়াও রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক ও র‌্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) এম খুরশীদ হোসেন গতকাল জানান, পয়লা বৈশাখ কেন্দ্র করে পুরো ঢাকায় প্রায় ৩ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া রমনার প্রতিটি গেটে পুলিশ, আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর বসানো হয়েছে। একই সঙ্গে সারা দেশে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। টিএসসি, শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা বটমূলসহ যেসব এলাকায় বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হবে সেসব এলাকায় টহল, চেকপোস্ট, অবজারভেশন পোস্টসহ বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, পয়লা বৈশাখ নির্বিঘ্ন করতে দফায় দফায় বৈঠক করেন ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা শহরের সব মার্কেটে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার ও বিভিন্ন স্তরে নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করা হয়েছে। সহজে মার্কেট এলাকায় চলাচলের জন্য ট্রাফিকব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে। ইভ টিজিং প্রতিরোধে সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা মাঠে থাকবেন।

গতকাল দুপুরে বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ বরণ উপলক্ষে রমনা বটমূলে নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, বাংলা নববর্ষবরণ উপলক্ষে রমনার বটমূলে ব্যাগ নিয়ে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। বিকাল ৪টার মধ্যে রমনায় সব অনুষ্ঠান শেষ করে স্থান ত্যাগ করতে হবে। পয়লা বৈশাখে ভুভুজেলাসহ উচ্চ শব্দ করে এমন বাদ্য ব্যবহার করে নগরবাসীর দুর্ভোগ সৃষ্টি করা যাবে না। তিনি জানান, প্রতি বছর ডিএমপি রমনা বটমূলে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। আমাদের সিটিটিসির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট আন্তর্জাতিক মানের। যদি কোথাও বোমা পাওয়া যায় তাহলে সিটিটিসির রোবোটিকস সিস্টেম ও ডগ স্কোয়াডের মাধ্যমে আইডেন্টিফাই করা যাবে। পরবর্তী সময়ে রোবটের মাধ্যমে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করা যাবে। এর মধ্যে যদি কোনো দুষ্কৃতকারী ঢুকে যায় তাহলে সোয়াত টিম সেই মহড়াও দিয়েছে। তাদের সব ধরনের সক্ষমতা রয়েছে। তিনি বলেন, এবারের পয়লা বৈশাখ যেন ঢাকাবাসীসহ সব বাঙালি উৎসবমুখরভাবে পালন করতে পারে সেজন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে। রমনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি, রবীন্দ্রসরোবর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক প্রায় ২ হাজার ৭০০ পুলিশ কাজ করছে। রমনাকেন্দ্রিক মোট নয়টি গেট থাকবে। এর মধ্যে চারটি দিয়ে প্রবেশ করা যাবে। বাকি পাঁচটি গেট দিয়ে প্রবেশ-বাইর হওয়া যাবে। প্রতিটি গেটে পুলিশ, আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। প্রত্যেককে সার্চ করে রমনায় প্রবেশ করানো হবে। রমনায় লোকসমাগম বেশি হলে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। রমনা পার্ক সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ৪টার পর আর কাউকে রমনায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে সরাসরি কোনো জঙ্গি থ্রেট বা হুমকি নেই। এর পরও যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। কেউ কোনো ধরনের দুঃসাহস দেখাতে পারবে না। এর আগে গতকাল সকালে রমনার নিরাপত্তা পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে র‌্যাব ডিজি এম খুরশীদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, পয়লা বৈশাখে হুমকি দেওয়া চিরকুটটি আমি দেখেছি ও পড়েছি। মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি করার জন্য তৃতীয় কোনো পক্ষ এ কাজ করেছে। তার পরও আমরা সতর্ক রয়েছি। এটা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। এটা কোনো জঙ্গি সংগঠনের কাজ নয়। এ চিঠির রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য নেই।

সর্বশেষ খবর