রবিবার, ২৮ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

শতবর্ষে সেই কিসিঞ্জার

লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র

শতবর্ষে সেই কিসিঞ্জার

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের বয়স ১০০ বছর হয়েছে শনিবার। শতবর্ষে পৌঁছানোর ছয় দিন আগে ২১ মে সিবিএস টেলিভিশন তাঁর একটি সাক্ষাৎকার প্রচার করে। সেখানে সাংবাদিক টেড কপেল তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত কম্বোডিয়ায় মার্কিন বাহিনীর বোমা হামলায় কমপক্ষে দেড় লাখ নিরস্ত্র মানুষ প্রাণ হারান। এ ব্যাপারে আপনার কোনো অনুশোচনা বোধ আছে? কিসিঞ্জারের সাফ জবাব- ‘ওটা ছিল সময়ের প্রয়োজনে যথাযথ পদক্ষেপ।’ একাত্তরে বাংলাদেশে দখলদার পাকিস্তানি সেনাদের নৃশংসতার তথ্য জেনেও প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দেননি প্রেসিডেন্ট নিক্সনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার। তিনি পাকিস্তানি হানাদারদের পক্ষাবলম্বনের পরামর্শ দেন নিক্সনকে। এমনকি মুক্তিযোদ্ধারা যখন পাকিস্তানি হায়েনাদের একের পর এক পরাস্ত করছিল এবং নিরস্ত্র বাঙালিদের বিরুদ্ধে হত্যাযজ্ঞ চালানোর তথ্য তদানীন্তন ঢাকার মার্কিন কনসাল জেনারেল আর্চার কে ব্লাডের টেলিগ্রাফে জানা সত্ত্বেও বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেননি কিসিঞ্জার। প্রেসিডেন্ট নিক্সন বেঁচে থাকার সময়েও কিসিঞ্জার কখনোই একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাদের গণহত্যায় সহযোগিতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করতে পরামর্শ দেননি কিংবা নিজেও এখন পর্যন্ত অনুতাপ প্রকাশ করেননি। এমনকি ইয়াহিয়া খান জান্তার বর্বরতারও নিন্দা জানাননি। মুক্তিযুদ্ধের পরপর বাংলাদেশ যেসব সমস্যা মোকাবিলা করছিল সেগুলোর সমাধানে তিনি সহায়তার হাত না বাড়িয়ে ব্যঙ্গোক্তি করেন- ‘সাহায্য করে কী হবে। বাংলাদেশ তো তলাবিহীন ঝুড়ি!’ সময়ের বিবর্তনে বাংলাদেশ এখন খাদ্যে উদ্বৃত্ত দেশে এবং উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হলেও সেই কিসিঞ্জারের বোধোদয় ঘটেনি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর