বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

আমির হোসেন আমুর বক্তব্য ব্যক্তিগত : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

আমির হোসেন আমুর বক্তব্য ব্যক্তিগত : তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির সঙ্গে সংলাপ নিয়ে আমির হোসেন আমুর বক্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত। এটি সরকার বা আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলের বক্তব্য নয়।’ গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ‘মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে সরকার নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় রাজি আছে, প্রয়োজনে জাতিসংঘের মধ্যস্থতাতেও হতে পারে, এ নিয়ে আপনাদের অবস্থান কী’ এমন প্রশ্ন করলে মন্ত্রী এ কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, আমির হোসেন আমু আমাদের দলের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি তাঁর ব্যক্তিগত বক্তব্য। তাঁর এ বক্তব্য নিয়ে আমাদের দলে এবং সরকারের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি। এমনকি ১৪ দলের মধ্যেও কোনো আলোচনা হয়নি। এটি সম্পূর্ণভাবে তাঁর ব্যক্তিগত বক্তব্য। তবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল, তিনি বলেছেন- আসলে গণমাধ্যমে যেভাবে এসেছে তিনি ঠিক সেভাবে বলেননি। যেভাবেই আসুক এটি তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত। দল, সরকার কিংবা ১৪ দলের কোথাও এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। হাছান মাহমুদ বলেন, যেভাবে ভারতে নির্বাচনের সময়ে চলতি সরকার দায়িত্ব পালন করে, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, যুক্তরাজ্যে পালন করে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টও পদত্যাগ করেন না, তিনিও নির্বাচনের সময়ে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। যেভাবে সব গণতান্ত্রিক দেশে চলতি সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে ঠিক সেভাবে আমাদের দেশেও বর্তমান সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সেই সরকারের আকার কী হবে না হবে সেটি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তিনি বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের আয়োজন এবং ব্যবস্থাপনাতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যারা গণতন্ত্রের অভিযাত্রা অব্যাহত রাখতে চায়, তাদের অবশ্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশনকে আমাদের সরকার সর্বোতভাবে সহায়তা করবে, যাতে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক, উৎসবমুখর একটি নির্বাচন হয়। আমরা চাই সে নির্বাচনে বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক। তিনি বলেন, সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি অত্যন্ত চমৎকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক, বিশ্বের কাছে উদাহরণ হিসেবে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক, সেটিই আমরা চাই। নির্বাচন নিয়ে যদি কোনো প্রসঙ্গ থাকে বিএনপিকে সেটি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। কারণ নির্বাচন আয়োজন এবং অনুষ্ঠান করছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশন যদি আমাদের ডাকে আমরাও যাব। তিনি বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনকে ভয় পায়। তারা ২০১৪ সালের নির্বাচন প্রতিহতের চেষ্টা করেছে, ৫০০ ভোট কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছে, দুজন প্রিসাইডিং অফিসারকে হত্যা করেছে এবং সাড়ে ৩ হাজার মানুষ পুড়িয়েছে, তার মধ্যে ৫০০ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। তারা আসলে নির্বাচন প্রতিহতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং সেই কথাটিই মির্জা ফখরুল সাহেব আবার বলেছেন। কিন্তু এবার আর তাদের পক্ষে নির্বাচন প্রতিহত করা কিংবা নির্বাচন বর্জন করা সম্ভবপর হবে না। বিভিন্ন সময় তারা এরকম অনুযোগ বিদেশিদের কাছে করে এসেছে। এবার সেটিও করা সম্ভবপর হবে না। দেশে একটি অবশ্যই সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে।

হাছান মাহমুদ বলেন, অবশ্যই বিএনপি একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে সিদ্ধান্ত নিতেই পারে নির্বাচনে অংশ নেবে কি না। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য তা নয়। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচন ভন্ডুল করে দেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করা। নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ হচ্ছে মুখ্য বিষয়। জনগণ যদি ব্যাপকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং ভোট অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ হয় তাহলে সেটি জনগণের অংশগ্রহণমূলক একটি ভালো নির্বাচন।’

সর্বশেষ খবর