সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় দণ্ডিত সাংবাদিক শফিক রেহমানের সাজা স্থগিত হলেও মাহমুদুর রহমানকে কেন কারাগারে যেতে হলো, সে ব্যাখ্যা দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, যায়যায়দিনের সাবেক সম্পাদক শফিক রেহমান সাজা স্থগিতের আবেদন করলেও মাহমুদুর রহমান করেননি। সে কারণে দুজনের ক্ষেত্রে আলাদা ফল এসেছে। গতকাল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া ভিডিও বার্তায় এ ব্যাখ্যা দেন আসিফ নজরুল। আইন উপদেষ্টা ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান ভাই যে মামলায় শাস্তি পেয়ে আজ জেলে আছেন, প্রকৃতপক্ষে এ মামলায় আরেকজন বরেণ্য সাংবাদিক শফিক রেহমানেরও সাজা হয়েছিল। উনি এ মামলার সাজা স্থগিত চেয়ে আপিলের আবেদন করেছিলেন। আইন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে সেটা অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু মাহমুদুর রহমান ভাই এটা করেন নাই।’ মাহমুদুর রহমানকে ‘অত্যন্ত দৃঢ় আত্মসম্মানবোধ, প্রচ দেশপ্রেমিক মানুষ’ হিসেবে বর্ণনা করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘উনার এ রকম ব্যক্তিত্বের কারণে হয়তো তিনি মনে করেছেন উনি সাজা স্থগিতের আবেদন করবেন না। বা অন্য কারণেই হোক আমি জানি না। যাই হোক উনি সাজা স্থগিত রেখে মুক্ত মানুষ হিসেবে আপিল করার কোনো আবেদন করেননি। ফলে এটা করার কোনো সুযোগ মন্ত্রণালয় বা সরকারের ছিল না।’
ভিডিও বার্তায় শুরুতেই আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘এ দেশে শেখ হাসিনার যে ফ্যাসিবাদী শাসন ছিল সেটার বিরুদ্ধে বুদ্ধিভিত্তিক লড়াইয়ের সূচনা করেছিলেন মাহমুদুর রহমান ভাই। এজন্য উনাকে প্রচ নিপীড়ন-নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। যেটার সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা হয় না। উনাকে একটি ভুয়া মামলায় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার শাস্তি দিয়েছিল। উনার অবর্তমানে শাস্তি দিয়েছিল। এ মামলার মেরিট নিয়েও প্রশ্ন তোলা যেতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘এ মামলায় বিচারকার্য সম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল। উনাকে অলরেডি শাস্তি দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। উনি বাংলাদেশে আসার কিছুদিন আগে উনার স্ত্রী শ্রদ্ধেয় ভাবীর বিরুদ্ধেও একটা অগ্রহণযোগ্য মামলা করা হয়েছিল। তিনি সেই মামলায় সাজা স্থগিত চেয়ে আপিলের জন্য আবেদন করেছিলেন। এটা আমার কাছে আসে না। এ আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যায়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যখন আমাদের অভিমত চেয়েছে আমরা তখন ইতিবাচক জোর সুপারিশ করেছি। আমাদের এ সুপারিশের ভিত্তিতে মাহমুদুর রহমান ভাইয়ের স্ত্রীর সাজা স্থগিত করে উনাকে আপিল করার সুযোগ দেওয়া হয়।’ এ মামলায় ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট যায়যায়দিনের সাবেক সম্পাদক শফিক রেহমান, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ পাঁচজনকে সাত বছরের কারাদ দেওয়া হয়েছিল। সাজাপ্রাপ্ত অন্য তিনজন হলেন জাতীয়তাবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন, তাঁর ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়া।