২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৪:১৮

বিশ্ব হার্ট দিবস আজ

ডা. এম. শমশের আলী

বিশ্ব হার্ট দিবস আজ

সারা বিশ্বে অনেক বিষয়ে সচেনতা বৃদ্ধি ও কর্মপরিকল্পনার জন্য বছরে একটি দিনকে ধার্য করা হয়। তেমনি প্রতি বছর ২৯ সেপ্টেম্বর তারিখকে হার্ট দিবস হিসেবে পালন করার একটি রেওয়াজ প্রতিষ্ঠিত হয়ে আসছে। 

বর্তমান সময়ে হার্টের অসুস্থতায় আমাদের দেশের আপামর জনতা আক্রান্ত হচ্ছে এবং তাদের মধ্যে অনেকে অকাল মৃত্যুবরণ করছে। এতে আমাদেরকে পারিবারিক, সামাজিক ও জাতীয়ভাবে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে, তন্মধ্যে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি কারণ হার্টের অসুস্থতায় যারা মৃত্যুবরণ করেন, তাদের একটি বড় অংশ কর্মক্ষম এবং উপার্জনশীল ব্যক্তি। তাই এসব বিবেচনা করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য সরকারিভাবে হার্টের অসুস্থতা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের জন্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে পরিচালনা করা উচিত। অর্থনৈতিক বিবেচনায় ডেঙ্গু যতটা না গুরুত্বপূর্ণ তার চেয়েও অনেকগুণ গুরুত্বপূর্ণ হার্টের অসুস্থতা। অথচ ডেঙ্গুর প্রচারণায় সরকারের যত তৎপরতা দেখা যায়, তার দশ ভাগের এক ভাগ প্রচারণাও হার্টের অসুস্থতার জন্য পরিলক্ষিত হয় না। গুরুত্ব বিবেচনায় হার্টের অসুস্থতা ডেঙ্গুর চেয়ে বেশি সচেতন করা উচিত। এটা একটা উদাহরণ মাত্র আমি ডেঙ্গুর সচেতনতাকে কোনোভাবেই খাটো করে দেখাতে চাচ্ছি না। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিভাগ ও সরকারকে অবশ্যই প্রায়রিটি নির্ণয় করে পদক্ষেপ গ্রহণ করার অনুরোধ করছি। 

আমাদের দেশে একটি বিরাট অংশ যাকে সাধারণ জনতা (আম-জনতা) বলা হয় তারাই আমাদের অর্থনৈতিক চাকাকে সচল রাখছে। তাদের সম্মিলিত জোড় (কর্মক্ষমতা) অনেক বেশি তাই আমাদের অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি হচ্ছে এইসব আম-জনতা। বর্তমান সময়ে হার্টের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত এসব মানুষগুলোই। তারা খাবার এবং আচার-আচরণগত কুসংস্কারে ভুগে থাকেন। এসব ব্যাপারে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সুনির্বাচিত পদক্ষেপই হবে উপযুক্ত। 

যারা গ্রামে থাকে তাদের চেয়ে শহরাঞ্চলে বসবাস করা লোক হার্টের অসুস্থতায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, এক্ষেত্রে শহরাঞ্চলের লোক বলতে এমন জনগোষ্ঠীকে বুঝানো হচ্ছে যারা কায়িকশ্রম বিবর্জিত জীবন-যাপন, অধিক পরিমানে খাদ্যগ্রহণ, বিষাক্ত খাদ্য গ্রহণ এবং তীব্র প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব পোষণ করে। এসব কারণে মানুষ সবচেয়ে বেশি হার্টের অসুস্থতায় আক্রান্ত হচ্ছে। এগুলো জনস্বাস্থ্যের স্বার্থের জন্য প্রচারণায় আনতে হবে। 

এবার বিশ্ব হার্ট দিবসের প্রতিপাদ্য হলো আপনার হৃদয় (হার্ট) দিয়ে প্রত্যেকের হৃদয় (হার্ট) ছোঁয়ার বা বুঝার চেষ্টা করুন। এখানে প্রতিপাদ্যটিকে উপস্থাপন করা হয়েছে স্পিরিচুয়াল হেলথ বা আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের আওতাভূক্ত। এর মানে শান্তির জন্য মানুষিক প্রশান্তি আনয়ন করা। আমাদের সমাজে যারা প্রভাব প্রতিপত্তিশালী লোক আছে তারা যদি আম-জনতার হৃদয়ের ব্যথা বুঝতে পারেন, তবেই শান্তি আসবে এবং হার্টের অসুস্থতা কম হবে।

পরিশ্রমে বুকব্যথা, বুকে চাপ, শ্বাসকষ্ট এবং অস্থির হয়ে পরলে এবং বিশ্রাম গ্রহণ করলে উপসর্গ দ্রুত নিরাময় হলে আপনাকে বুঝে নিতে হবে যে, আপনার হার্ট অসুস্থ হয়ে পড়েছে। যদিও এসব উপসর্গ খুব দ্রুত আরাম হয়ে যায় এবং বার বার দেখা দেয় বলে একে অবহেলা করার উপায় নেই। তাই কাল বিলম্ব না করে সুচিকিৎসা গ্রহণ করে এই মরণব্যাধি থেকে রক্ষা পেতে পারেন।   
  
লেখক: 
পরিচালক ও চিফ কনসালটেন্ট 
শমশের হার্ট কেয়ার
মিরপুর রোড, শ্যামলী, ঢাকা
[email protected]

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর