বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা
দৃষ্টিনন্দন ছয় লেন কালনা সেতু

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায় ঘটবে অর্থনৈতিক বিপ্লব

সাজ্জাদ হোসেন, নড়াইল

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলায় ঘটবে অর্থনৈতিক বিপ্লব

চলতি বছর সেপ্টেম্বরে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার সঙ্গে সড়কপথে রাজধানীর যোগাযোগের জন্য নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মধুমতি নদীর ওপর বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের কালনা সেতু যান ও জনচলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার লক্ষ্যে বিরামহীন গতিতে এগিয়ে চলছে নির্মাণকাজ। সেতুর মাঝখানে বসানো হয়েছে ভিয়েতনামে তৈরি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ১৫০ মিটার দীর্ঘ নেলসন লস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) স্টিলের স্প্যান। মূলত জাপানের নিপ্পন কোম্পানির তৈরি ধনুকের মতো বাঁকা এ স্প্যানটি ছয় লেনের এ সেতুটিকে দৃষ্টিনন্দন এবং আকর্ষণীয় করে তুলেছে। সেতুর সবচেয়ে জটিল এ স্প্যান বসানোসহ ইতোমধ্যে শতকরা প্রায় ৯১ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এখন চলছে শেষ পর্যায়ের কাজ। এই সেতু চালু হলে নড়াইলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই নির্মাণ কাজ শেষে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান। কালনা সেতু চালুর মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে নড়াইলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার মানুষের। বিশেষ করে অর্থনৈতিকভাবে নড়াইল অঞ্চল কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও পদ্মা সেতুর পর কালনা সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন এ জেলার মানুষ। সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় বদলে যাচ্ছে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পিছিয়ে থাকা নড়াইলসহ ১০টি জেলার আর্থ-সামাজিক চিত্র।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের আওতায় নড়াইলের মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের কালনা সেতু চালু হলে নড়াইলে শিল্প-সংস্কৃতি, ক্রীড়া, পর্যটন, কৃষি, মৎস্য ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে। পাল্টে যাবে জেলার অর্থনীতি। ফলে কালনা সেতুর হওয়ার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এই এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মানও পরিবর্তন হবে। বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে এ সেতু নির্মিত হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জাপানের টেককেন করপোরেশন ও ওয়াইবিসি এবং বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড যৌথভাবে এ সেতুর বাস্তবায়ন করছে। সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও সওজ বিভাগের নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘ইতোমধ্যে সেতুর প্রায় ৯১ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুতগতিতে বাকি কাজ শেষ করে আগামী সেপ্টেম্বরেই সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য উদ্বোধন করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।’

সর্বশেষ খবর