আপাতত নীতি সুদহার না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ব্যাংকগুলোর আমানত ও ঋণের সুদহারও বাড়বে না। উচ্চ মূল্যস্ফীতি থাকার পরও মুদ্রানীতির অবস্থান সঠিক পথে রয়েছে তাই সহসাই আর নীতি সুদহার বাড়ানোর প্রয়োজন নেই বলে মনে করে মুদ্রানীতি কমিটি। ফলে নীতি সুদহার ১০ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকবে। এ ছাড়াও স্ট্যান্ডার্ড ডিপোজিট ফ্যাসিলিটির সুদহার ৮ দশমিক ৫ শতাংশ এবং স্ট্যান্ডার্ড লেন্ডিং ফ্যাসিলিটির সুদহার ১১ দশমিক ৫ শতাংশও বহাল থাছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মুদ্রানীতি কমিটির পর্যালোচনা সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, চ্যালেঞ্জ ও দৃষ্টিভঙ্গি মূল্যায়ন করেছে মুদ্রানীতি কমিটি।
কমিটি বর্তমান মূল্যস্ফীতির প্রবণতা, দৃষ্টিভঙ্গি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা, সাম্প্রতিক আর্থিক বাজারের উন্নয়ন এবং বাহ্যিক ক্ষেত্রের উন্নয়ন পর্যালোচনার ওপর দৃষ্টি রেখেছে। মুদ্রানীতি কমিটি বিশেষ করে ব্যাংক খাতের তারল্য পরিস্থিতি, কিছু প্রচলিত ও ইসলামী ব্যাংকের নগদ অর্থের ঘাটতি, সুদহারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অবস্থান এবং বিনিময় হারের উন্নয়ন ব্যাপকভাবে পর্যালোচনা করেছে। বিশ্বব্যাপী পণ্য মূল্য কমার প্রবণতা, ভূরাজনৈতিক স্থিতিশীলতা দেশে বিনিময় হারে স্থিতিশীলতা আনার পাশাপাশি আমন ধানের প্রত্যাশিত ভালো ফলন এবং শীতকালীন সবজির সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি কমবে বলে মনে করে কমিটি। ব্যাংক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সম্পদের গুণমান মূল্যায়ন পর্যালোচনার উদ্যোগ নিয়েছে, যার লক্ষ্য ব্যাংকের বাস্তব সম্পদের পরিধি, মাত্রা এবং আকার নির্ধারণ করা বলে জানিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। এ ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক চলমান তারল্য সহায়তার প্রক্রিয়া এবং খোলা বাজার কার্যক্রমের মাধ্যমে ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় পণ্য ও পরিষেবার সরবরাহ বাড়ানোর জন্য উৎপাদনশীল খাত, বিশেষ করে কৃষি এবং কুটির, ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগে (সিএমএসএমই) ঋণ বিতরণে মনোযোগ দেওয়া উচিত বলে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করেছে মুদ্রানীতি কমিটি।