ব্রিটেনের লেবার দলের রাজনীতিক রূপা আশা হক বলেছেন, অধিকৃত ভূখণ্ডে ইসরায়েল রাষ্ট্র সৃষ্টিতে সহায়তা করার জন্য ব্রিটিশ সরকার ক্ষমতা চাইতে পারত। ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে এ দাবি করেছে। ইসরায়েল ইস্যুতে বক্তব্য দেয়ার জন্য যখন লেবার দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে তখন রুপা হকের এ বক্তব্যের খবর বের হলো।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রূপা হক লন্ডনের এইলিং প্রশাসনিক এলাকার জন্য লেবার দলের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ডেইলি মেইল দাবি করেছে, গত বছর ফিলিস্তিনি সংহতি প্রচারাভিযানের সময় এক সভায় রুপা হক ব্রিটিশ সরকারকে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।
ইসরায়েল সৃষ্টির বিষয়ে লন্ডনের ক্ষমা চাওয়ার উচিত কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে রূপা হক বলেছিলেন, '১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ সরকারের অধীনে ইসরায়েল সৃষ্টি হয়েছিল। হ্যা, আমার মনে হয় ক্ষমা চাওয়া উচিত। ...আপনি সেটা করতে পারেন। সম্ভবত লেবার দল ক্ষমতায় গেলে সেটা করতে পারে'
রুপা হক আরো বলেছিলেন, 'ক্ষমা চাইলে তা আবার সমালোচনার বিষয়ে পরিণত হবে।' ঐতিহাসিক এ বিষয়টি সামনে এনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন।
এর আগে লেবার দলের এমপি নাজ শাহ বলেছিলেন, ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো এলাকায় পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা দরকার। এ বক্তব্য দিয়ে তিনি মারাত্মক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। তখন নাজ শাহের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন রুপা হক। তবে নাজ শাহ মারাত্মক চাপের মুখে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন।
লেবার দলের অনেক বেশি খ্যাতিমান ব্যক্তি হওয়ার পরও লন্ডনের সাবেক মেয়র কেইন লিভিংস্টোন একই পরিণতি বরণ করেন। তিনি নাজ শাহকে সমর্থন করেছিলেন এবং হিটলারকে ইহুদিবাদী বলেছিলেন।
লিভিংস্টোন সম্প্রতি আরবি ভাষার টেলিভিশন চ্যানেল আল-ক্বাদ আল-আরাবিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “ইসরায়েল রাষ্ট্র সৃষ্টি করাই মৌলিকভাবে ভুল হয়েছে। কারণ সেখানে ২,০০০ বছর ধরে ফিলিস্তিনি সম্প্রদায় বসবাস করে আসছিল।'
১৯৪৮ সালে অবৈধ ইসরায়েল সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়। তখন ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখল করে কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ সামরিক অভিযানের মাধ্যমে আরব অঞ্চলে ইসরায়েলকে সম্প্রসারিত করা হয়। এসব অভিযানের মাধ্যমে লেবাননের শেবা ফার্ম ও সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে নেয়া হয়েছে। এছাড়া, ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে জর্দান নদীর পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা ও পূর্ব বায়তুল মুকাদ্দাস দখল করে নেয় ইসরায়েল।
বর্ণবাদ ও ইহুদিবাদবিরোধী অবস্থান নেয়ার কারণে গত দুই মাসে লেবার দল থেকে ৫০ জনের বেশি রাজনীতিককে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত মাসে দলের প্রধান করবিন বলেছেন, বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি এবং দলের ভেতরে যাতে কোনো ধরনের বর্ণবাদের চর্চা না হতে পারে সেজন্য তিনি আচরণবিধি চালুর প্রস্তাব করবেন।
বিডি-প্রতিদিন/৯ মে ২০১৬/শরীফ