বিয়ের পর স্ত্রী সানা ফতেমাকে নিয়ে ইতালিতে হানিমুনে যাবার ইচ্ছা ছিল ফইজান প্যাটেলের। সেইমতো ভারতের ম্যাঙ্গালোরের ওই দম্পতি প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎই পাসপোর্ট হারিয়ে ফেলেন সানা। স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা হতাশায় ভেঙে পড়ে ওই দম্পতি। যদিও ট্রিপ বাতিল না করে সানাকে ছাড়াই ইতালিতে যাওয়ার ব্যাপারে মনস্থির করেন পেশায় ফটোগ্রাফার ম্যাঙ্গালোরের বাসিন্দা ফইজান। এরপর গত ৪ আগস্ট স্ত্রী সানার ছবি দিয়ে ট্যুইট করেন ফইজান। তিনি লেখেন, ট্রিপে যাওয়ার দুইদিন আগে আমার স্ত্রীর পাসপোর্টটি হারিয়ে গেল।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও স্ত্রীর হারিয়ে যাওয়া পাসপোর্টের খোঁজ না মেলায় গত ৬ আগস্ট ফের একটি ট্যুইট করে ফইজান লেখেন ‘আজ রাতেই আমাকে একাই তুরস্কের বিমানে উড়ে যেতে হচ্ছে। আমার স্ত্রী তাঁর পাসপোর্টটি হারিয়ে ফেলেছে’। ৭ আগস্ট ভোরে বিমানবন্দরে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ছবি পোস্ট করে তিনি লেখে,ন ‘স্ত্রীকে ছাড়াই ইতালির দিকে ভ্রমণ করছি’।
এরপর গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬.১৬ মিনিটে বিমানে নিজের সিটে বসে পাশের সিটটিতে স্ত্রীর ছবি হাতে নিয়ে আরেকটি পোস্ট করে ফইজান লেখেন, ‘এভাবেই আমি আমার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়েই ভ্রমণ করছি’। এরপর সেই ট্যুইটি ট্যাগ করে দেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে। ব্যস তাতেই কেল্লা ফতে! রাত ১০.৪৩ মিনিটে ফইজানের ওই ট্যুইট দেখার পর পরই পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাল্টা উত্তর দেন। সুষমা বলেন, ‘আপনার স্ত্রীকে বলুন আমার সঙ্গে যেন যোগাযোগ করেন। আমি আপনাকে নিশ্চিত করছি যে আপনার পাশের সিটে বসেই আপনার স্ত্রী যেন ভ্রমণ করতে পারেন’। এরপর রাতের দিকে আরও একটি ট্যুইট করে সুষমা জানান, 'আপনাদের সহায়তা করতে উদ্যোগ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে'। ট্যুইটে তিনি বলেন, ‘আমার অফিস সানার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আগামীকালই আপনি একটা ডুপ্লিকেট পাসপোর্ট পাবেন’।
সুষমার এই উদ্যোগে ভাষা হারিয়ে ফেলেন সানা। ট্যুইট করে সানা জানান, ‘আমি আমার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে পারছি না কারণ আপনি অনেক করেছেন’।
তবে এবারই নয়, এর আগেও ঠিক একইভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন সুষমা। ১০ দিন আগে হরিয়ানার এক দম্পতিকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন সুষমা স্বরাজ। ফেসবুকে পরিচয় হওয়ার পর কাজাখাস্তানের নারী জাহানাকে বিয়ে করেন ভারতের হরিয়ানার বাসিন্দা টিনু। কিন্তু টুরিস্ট ভিসা শেষ হয়ো যাওয়ায জাহানাকে হারিয়ে ফেলার ভয় পেয়েছিলেন টিনু। জাহানা-টিনুর ওই ঘটনা একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরই তার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নজরে আসে। তখনও সুষমা স্বরাজ ওই দম্পতিকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। ওই সময় তিনুকে জানান, স্ত্রীকে ফিরে পেতে হলে ওই ভিসার এক কপি যেন তাকে পাঠানো হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত টিনু ফিরে পান তার স্ত্রীকে।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৯ আগস্ট, ২০১৬/ আফরোজ