ভারেতর রাজধানী দিল্লির এক চরম অমানবিক ছবি ধরা পড়লো রাস্তায় লাগানো ছোট্ট ক্যামেরায়। গাড়ির ধাক্কায় আহত, মৃত্যুযন্ত্রণায় কাতরাতে থাকা একটি মানুষ প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে পড়ে রইলেন রাস্তায়। তারপর কতজন এলেন গেলেন, কিন্তু দেখেও দেখলেন না। যিনি কাছে গিয়ে দেখলেন তার উদ্দেশ্য ছিল মরতে বসা মানুষটার পকেট সাফ করা। করলেনও। আর অমানবিক ঘটনার বলি হয়ে, রাস্তাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন আহত মানুষটি।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার ভোর সাড়ে ৫টায় নয়াদিল্লির সুভাষ নগর এলাকায়। দুর্ঘটনাস্থলের কাছে লাগানো একটি সিসিটিভি ক্যামেরায় দুর্ঘটনা এবং তার পরের যে ছবি ধরা পড়েছে, তা দেখলে চমকে উঠবেন আপনিও। নাইট ডিউটি সেরে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন বছর চল্লিশের মতিবুল। সুভাষ নগরের কাছে পিছন থেকে আসা একটি টেম্পো আচমকা সজোরে তাকে ধাক্কা মারে। রাস্তার পাশেই ছিটকে পড়েন তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাতে থাকেন। সিসিটিভিতে দেখা যায়, ঘাতক গাড়িটিও কিছুটা দূর গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। গাড়ি থেকে চালক নীচে নামেন। হেঁটে মতিবুলের কাছে আসেন। তারপর নিজের গাড়ির কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না দেখে নিয়ে দিব্যি গাড়ি চালিয়ে চলে যান।
তারপরও অনেকটা সময় কেটে গেছে। লোকজনের আনাগোনা শুরু হয়েছে। তখনও বেঁচে ছিলেন মতিবুল। কিন্তু কোনও মানুষই সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি। দেখেছেন, দেখে পাশ কাটিয়ে, মুখ ঘুরিয়ে বা হয়ত দেখতে দেখতেই চলে গেছেন যে যার কাজে। এর মধ্যেই রাস্তা ফাঁকা থাকার সুযোগ পেয়ে এক যুবক মতিবুলের মোবাইলটা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এই ছবিও ধরা পড়েছে ক্যামেরায়।
পরে খবর পেয়ে সকাল ৭টা নাগাদ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। তবে জীবিত নয়, উদ্ধার হয় তার মৃতদেহ। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা জানান, অত্যধিক রক্তক্ষরণেই মারা যান তিনি। অর্থাৎ সময়মত হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারলে হয়ত বেঁচে যেতেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/ ১১ আগষ্ট ২০১৬/ সালাহ উদ্দীন