ভারতের তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা গত বছরের ৫ ডিসেম্বর স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় মারা গেছেন। ‘আম্মা’ হিসেবে পরিচিত জয়ললিতার মৃত্যুর আগে চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে ৭৫ দিন ভর্তি ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে কার্যত অন্ধকারে রাখা হয়েছিল সাধারণ জনতাকে। এই নিয়ে অভিযোগ, পালটা অভিযোগ কম ওঠেনি। কিন্তু, এর মধ্যেই তাৎপর্যপূর্ণ দাবি করলেন সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালের সাবেক চিকিৎসক ড. রাম সীতা।
তামিল দৈনিক ‘দিনামালার’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তার অভিযোগ, 'মারা যাওয়ার পর জয়ললিতাকে চেন্নাইয়ের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আর রাজনৈতিক চাপেই তাকে আইসিইউতে ভর্তি করে রাখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।'
এই ঘটনার প্রতিবাদ করেই হাসপাতাল থেকে পদত্যাগ করেন ড. সীতা। তার আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ হচ্ছে, হাসপাতালের পক্ষ থেকে যখন জানানো হয় যে আম্মা ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন, তখন এমজিআর-এর সমাধীর পাশে তার জন্য জায়গার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল। যদিও এই অভিযোগ সম্পর্কে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
নির্দিষ্ট কয়েকজন বাদে কেউই জানতেন না, কেমন আছেন জয়ললিতা? কী চিকিৎসা চলছে তার? আম্মার মৃত্যুর পর এই নিয়েই সরব হন তার ভাইঝি দীপা।
যদিও সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্ত আপডেট দেওয়া হত শশীকলা নটরাজনকে। আর এই শশীকলার বিরুদ্ধেই জয়ললিতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছেন তামিলনাড়ুর কেয়ারটেকার মুখ্যমন্ত্রী ও পন্নীরসেলভম। আম্মার মৃত্যু তদন্তের পক্ষেও সওয়াল করেছেন তিনি।
যদিও পন্নীরসেলভম বা ওপিএস বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন বলে পালটা অভিযোগ শশী শিবিরের। চলতি মাসেই হাসপাতালের পক্ষ থেকে সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসক প্যানেলের তিন চিকিৎসকদের দিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করানো হয়। সেখানে লন্ডন থেকে আসা ড. রিচার্ড বিয়াল জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মারা গেছেন জয়ললিতা।
এবার, ড. রাম সীতার অভিযোগে নয়া মোড় পেল জয়ললিতার মৃত্যু রহস্য। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর পদের জন্য লড়াইয়ে থাকা দুই প্রতিদ্বন্দ্বী শশীকলা ও পন্নীরসেলভমের মধ্যে এর কী প্রভাব পড়বে, সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।
বিডি প্রতিদিন/১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/এনায়েত করিম