গত কয়েক সপ্তাহে দেশে দাম কমে যাওয়ায় কৃষকের স্বার্থ রক্ষা করতে নিষেধাজ্ঞার প্রায় পাঁচ মাস পর আবারও পিয়াজ রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। যদিও পিয়াজের বাম্পার ফলনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়েছে দেশটি।
বুধবার দেশটির খাদ্য ও ভোক্তাবিষয়ক মন্ত্রী গণমাধ্যমকে জানান, গত বছরের তুলনায় মার্চে ৪০ লাখ টন বেশি পিয়াজ উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হলে কৃষকেরা ভালো দাম পাবেন।
তিনি বলেন, দাম এখন স্থিতিশীল হয়েছে। ফসলের পরিমাণও প্রচুর। এখন পিয়াজের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলে তা দামকে চাপে ফেলবে।
দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বেশিরভাগ খুচরা বাজারে পিয়াজের দাম প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ রুপিতে নেমে এসেছে। বাম্পার ফলনের কারণে দাম আরও কমতে পারে। এ সময় রফতানি করলে কৃষকেরা ভালো দাম পাবেন।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর পিয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত। ভারতের বাজারেই সে সময় প্রতি কেজি পিয়াজের দাম ছিল ১০০ রুপি। ভারত সরকার মজুতের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করে।
বাংলাদেশ আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের ওপরই নির্ভরশীল। ফলে, দেশের বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়তে থাকে। ২৫-৩০ টাকা কেজির পিয়াজে ডাবল সেঞ্চুরি হয়।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি দেশি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। আমদানি করা পিয়াজের দাম প্রতি কেজি ৭০ থেকে ১০০ টাকা।
ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া ও দ্য ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, রবি মৌসুমে ভারতে পিয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। আর এই বেশি ফলনের কারণে পিয়াজের দাম কম। গত বছরের মার্চে ২৮ দশমিক ৪ লাখ মেট্রিক টন পিয়াজ উৎপাদিত হয়েছে, সেখানে এ বছর ৪০ লাখ টনের বেশি পিয়াজ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এইজন্য কৃষকের ন্যায্য মূল্য পেতে রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত।
দেশটির খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, আগামী এপ্রিলে পিয়াজ উৎপাদন হতে পারে ৮৬ লাখ মেট্রিক টন যা গতবছরে হয়েছিল ৬১ লাখ মেট্রিক টন। ফলে কৃষকের স্বার্থে পিয়াজ রফতানির সিদ্ধান্ত নিতেই আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকের সিদ্ধান্ত বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক মহাপরিচালককে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে পিয়াজ রফতানি শুরু করবে ভারত।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারত পিয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ার পর বাংলাদেশে এই পণ্যের বাজারে দেখা দেয় অস্থিরতা। এই নিত্যপণ্যের দাম প্রতি কেজি ৩০-৪০ টাকা থেকে আড়াইশ টাকায় উঠে যায়।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম