৪ আগস্ট, ২০২০ ১১:৩১

জাতিসংঘ প্রতিবেদনে আজাদ কাশ্মীরের শোচনীয় মানবাধিকার চিত্র

অনলাইন ডেস্ক

জাতিসংঘ প্রতিবেদনে আজাদ কাশ্মীরের শোচনীয় মানবাধিকার চিত্র

পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের মানবাধিকার চিত্র উঠে এল জাতিসংঘের প্রতিবেদনে।

২০১৮ সালে মে থেকে ২০১৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত আজাদ কাশ্মীরের মানবাধিকার চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, সেখানে বাক স্বাধীনতা ও সংগঠনের স্বাধীনতা নেই। সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে এবং রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ও বিরোধী দলের কর্মীদের ওপর সন্ত্রাস-বিরোধী আইনের অপহার হচ্ছে।

পক্ষান্তরে, ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, জম্মু ও কাশ্মীরে প্রচুর পরিমাণে মানসম্মত তথ্য পাওয়া গেছে, যা পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরে ছিল না।

বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও জম্মু ও কাশ্মীরে বিভিন্ন এনজিও, মানবাধিকার সংগঠনের কর্মী ও সাংবাদিকরা তাদের কার্যক্রম চালাতে সক্ষম হয়েছে। তারা সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো কোনও ঘটনা ঘটলে তা নিয়ে ডকুমেন্টারি করতে পেরেছে।

কিন্তু আজাদ কাশ্মীর ও গিলগিট বালতিস্তানে বাক-স্বাধীনতা, মতামত প্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের ওপর বিধি-নিষেধ থাকায় সেখান মানবাধিকার কর্মীরা সেখানকার প্রকৃত মানবাধিকার চিত্র তুলে আনতে পারেননি।

আশির দশকের শেষের দিক থেকে আজাদ কাশ্মীরের কিছু সন্ত্রাসী সংগঠন ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন, অপহরণ, বেসামরিক মানুষকে হত্যা ও যৌন হয়রানির মতো প্রকট অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি চারটি বড় জঙ্গি সংগঠন- যেমন:-লস্কর-ই-তৈয়্যেবা, জইশ-ই-মুহাম্মদ, হিজবুল মুজাদিন ও হরকাতুল মুজাহিদিন এই অঞ্চলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। আর এগুলোর প্রত্যেকটি পরিচালিত হয় পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীর থেকে।

গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কিছু ভারতীয় আধা-সামরিক সদস্য নিহত হন। এই হামলার জন্য দায় স্বীকার করে জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ। এই জঙ্গি সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ মাসুদ পাকিস্তানে অবস্থান করছেন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি সেই সময় এই তথ্য জানান।

আজাদ কাশ্মীরে সাংবাদিকরা ক্রমাগত হুমকি ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। গিলগিট বালতিস্তানের গণমাধ্যম কর্মীদের সংগঠন ‘কমিটি টু প্রটেক্ট’ এই অভিযোগ তুলেছে।

সংগঠনটির মতে, সেখানে সাব্বির শিহাম নামে এক সাংবাদিককে তার অনুপস্থিতিতে ২২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং ৫০ হাজার পাকিস্তানি রুপি জরিমানানও করা হয়েছে।

আজাদ কাশ্মীরের আরেকটি প্রধান সমস্যা হচ্ছে সেখানকার প্রাকৃতিক সম্পদগুলোর ওপর স্থানীয়দের কোনও কর্তৃত্ব নেই। পাকিস্তান ফেডারেল এজেন্সি কর্তৃক এগুলো নিয়ন্ত্রিত।

সেই সঙ্গে সেখানে রয়েছে গুম করে দেওয়ার মতো ঘটনা। তাদেরকে অনেক গোপন ডিটেনশন সেন্টারে আটকে রাখা হয়। এদের মধ্যে অনেকেই এমন আছে যাদের আর কোনওদিন খোঁজও পাওয়া যায়নি।

বিডি প্রতিদিন/কালাম 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর