‘আইএনএস বিক্রান্ত’ ভারতের তৈরি করা প্রথম বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ। শুক্রবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু। উদ্বোধন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
‘আইএনএস বিক্রান্ত’ ঘুরে বিবিসির প্রতিবেদক যুগল পুরোহিত জানিয়েছেন তার অভিজ্ঞতার কথা।
রণতরিটির ওজন ৪৫ হাজার টন, এটি ভারতের দীর্ঘ ১৩ বছরের সাধনার ফল। লম্বায় ৮৬০ ফুট আইএনএস বিক্রান্ত, আর উচ্চতায় ১৯৭ ফুট। ভারতের নিজস্ব নকশায় তৈরি হয়েছে বিমানবাহী এই যুদ্ধজাহাজ। ৩০টি যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার ধারণের ক্ষমতা রাখে বিক্রান্ত।
এই যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে ২০ হাজার কোটি রুপি। ২০১৭ সালেই ভারতের নৌবাহিনীতে রণতরিটির যুক্ত হওয়ার কথা ছিল কিন্তু নির্মাণের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজে দেরি হওয়ায় নৌবাহিনীতে রণতরিটির যুক্ত হতে কয়েক বছর সময় লেগেছে।
এই ‘বিক্রান্ত’ শব্দের অর্থ ‘সাহসী’। যুদ্ধজহাজের এই নামের বিশেষ কারণও রয়েছে। ‘বিক্রান্ত’ ছিল ভারতের প্রথম বিমানবাহী রণতরি। যুক্তরাজ্য থেকে রণতরিটি কেনা হয়েছিল। ১৯৬১ সালে রণতরিটি ভারতের নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়। সেই রণতরি ছিল ভারতের গর্বের প্রতীক। বেশ কিছু সামরিক অভিযানে সেই রণতরিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। ১৯৭১ সালেও রণতরিটির ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তবে ১৯৯৭ সালে রণতরিটিকে পরিষেবা থেকে প্রত্যাহার (ডিকমিশনড) করা হয়।
এই রণতরিতে প্রায় ১ হাজার ৭০০ ক্রু সদস্যের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এর আছে চারটি ইঞ্জিন, যা একসঙ্গে ৮৮ মেগাওয়াট শক্তি তৈরি করতে সক্ষম। রণতরিটিতে তিনটি গ্যালি বা প্যান্ট্রি রয়েছে। সেখানে কফি বানানোর যন্ত্র, টেবিল ও চেয়ার আছে।
একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আপনি যদি এই গ্যালিগুলোকে এক করেন, তাহলে প্রায় ৬০০ জন ব্যক্তি একসময়ে এখানে তাঁদের খাবার খেতে পারবেন।’
রণতরিটিতে একটি ১৬ শয্যার হাসপাতাল আছে। আছে দুটি অস্ত্রোপচার কক্ষ। এ ছাড়া আছে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট।
রণতরিটির হ্যাঙ্গারে রাশিয়ায় তৈরি দুটি যুদ্ধবিমান দেখা যায়। যার মধ্যে একটি মিগ-২৯কে ফাইটার। ফ্লাইট ডেক অফিসার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিদ্ধার্থ সোনি বলেন, তাঁদের ফ্লাইট ডেকের আকার প্রায় ১২ হাজার ৫০০ বর্গমিটার। তাঁরা একবারে ১২টি যুদ্ধবিমান ও ৬টি হেলিকপ্টার চালাতে পারবেন।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল