সিরিয়ার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর রাজধানী দামেস্ক অভিমুখী অগ্রাভিযানের মুখে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন হওয়ার পর রবিবার ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিরিয়ার চলমান পরিস্থিতির ব্যাপারে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, সিরিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একথা জানাতে চায় যে, সিরিয়ার জনগণের ঐক্য, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি তেহরান সব সময় সম্মান জানিয়ে এসেছে। ইরান মনে করে, সিরিয়ার ভবিষ্যতের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র দেশটির জনগণের রয়েছে। এ কাজে কোনও বিদেশি শক্তির ধ্বংসাত্মক হস্তক্ষেপ কিংবা চাপিয়ে দেওয়া কোনও কিছু মেনে নেওয়া সিরিয়ার জনগণের উচিত হবে না।
এই মুহূর্তে যেটি প্রয়োজন সেটি হচ্ছে- অবিলম্বে ধ্বংসাত্মক সামরিক সংঘাত বন্ধ করা এবং সব ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। এরপর সিরিয়ার সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে জাতীয় সংলাপ শুরু করা, যাতে দেশটির সকল মত ও পথের অধিকারী জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতকারী একটি জাতীয় সরকার গঠন করা যায়।
ইরান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৫৪ নম্বর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সিরিয়ার রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে অতীতের মতো জাতিসংঘকে সহযোগিতা করে যাবে।
সিরিয়া যখন তার ইতিহাসের একটি বিপজ্জনক সন্ধিক্ষণ অতিক্রম করছে তখন সেদেশের প্রতিটি নাগরিকের পাশাপাশি দেশটিতে অবস্থানরত সকল বিদেশি নাগরিকের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সেইসঙ্গে দেশটির পবিত্র ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা যেমন রক্ষা করতে হবে তেমনি আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সকল দূতাবাস ও বিদেশি মিশনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
ইরানের সঙ্গে সিরিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে এবং দু’দেশের সম্পর্ক সব সময় বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। আশা করা যায়, দু’দেশের জনগণের যৌথ স্বার্থ রক্ষা করার কথা বিবেচনা করে উভয় দেশের নেতৃবৃন্দ প্রজ্ঞাপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতিগুলো মেনে চলবেন।
ইরান সিরিয়াকে পশ্চিম এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী দেশ বলে মনে করে। কাজেই সিরিয়ায় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার কাজে যেকোনও ধরনের সাহায্য করতে তেহরান সব সময় প্রস্তুত রয়েছে। এ লক্ষ্যে ইরান পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের প্রভাবশালী পক্ষগুলোর সঙ্গে সংলাপ ও আলোচনা অব্যাহত রাখবে।
নিঃসন্দেহে ইরান সিরিয়াসহ আঞ্চলিক পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সিরিয়ার রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারকারী পক্ষগুলোর কার্যক্রম ও আচরণ বিবেচনায় নিয়ে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে তেহরান। সূত্র: পার্সটুডে
বিডি প্রতিদিন/একেএ